দেশের খবর: ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। ৪ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ভোট নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গতকাল বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর নির্বাচনের তফসিল ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তফসিল ও ভোটের তারিখ নির্ধারণে এখনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি কমিশন।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। কেননা সংবিধান অনুযায়ী দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি দশম সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসাবে আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ওই ৯০ দিনের শুরু হচ্ছে আগামী ৩১ অক্টোবর। ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে এনেছে কমিশন। আগামী ১ নভেম্বর বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে পাঁচ নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করবেন।
ইসি সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর নির্বাচনের তফসিল নিয়ে সভা করবে নির্বাচন কমিশন। ৪ বা ৫ নভেম্বর ওই সভা হতে পারে। এরপর রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। ওই ভাষণেই সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ইতোমধ্যে ভাষণের সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই ভাষণে সব দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাবেন সিইসি। সাধারণত তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ৪০-৪৫ দিন সময় রেখে সংসদ নির্বাচনের ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট গ্রহণ হতে পারে বলে আলোচনা আছে।
নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, তারা আশা করছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। একজন কমিশনার দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশে ফিরলে তফসিল ঘোষণার বিষয়ে একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। ভোটের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য সবাইকে আহ্বান জানান তিনি।
সংশোধনী আরপিও মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে: সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সুযোগ রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। আইন মন্ত্রণালয়ে সেটি ভেটিং করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। ইসি সচিব বলেন, সংসদের চলতি অধিবেশনে এটা পাস হতে পারে। পাস না হলে সংসদের অবর্তমানে যে বিষয়টি (অধ্যাদেশ) থাকে সেটি কার্যকর হবে।
৩১ অক্টোবর ২৩ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক: নভেম্বরের ৪ তারিখে তফসিল ঘোষণার অংশ হিসাবে আগামী ৩১ অক্টোবর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডেকেছে কমিশন। প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ বিষয়ক এ সভায় জাতীয় নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা গ্রহণসহ ১১টি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনপ্রশাসন, শিক্ষাসহ ২৩ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।