দেশের খবর: নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে, আলোচনাও এগিয়ে যাবে, তবে সংলাপ শেষ বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
নির্বাচনের সময় মন্ত্রী-এমপি সদস্যরা সরকারি কোন সুযোগ গ্রহণ করবে না বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের সময় মন্ত্রীদের গাড়িতে পতাকা লাগানো হবে না। সরকারি সার্কিট হাউস ব্যবহার করতে পারবে না। অন্যান্য প্রার্থীরা যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাও সেই রকম সুযোগ সুবিধা পাবে। অতিরিক্ত সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, সেনা মোতায়েন থাকবে। তবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। সংসদ ভেঙে ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের প্রস্তাব নাচক করে দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের বাহিরে যাওয়া যাবে না। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। নির্বাচনের সময় এমপিদের কোন পাওয়া থাকবে না। তারা (ঐক্যফ্রন্ট) যে ৭টি দাবি দিয়েছেন তাদের বেশিভাগ প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার একটা বাহানা। নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে গিয়ে তৃতীয় শক্তির জন্য কোনো সুযোগ রাখা হবে না।
কাদের বলেন, সত্যিকারের রাজবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আইনমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারা আজকে মন খোলে আলোচনা করেছেন। আজকের যে দাবি নিয়েছে এসেছেন। তার মধ্যে নির্বাচনের আগে কিছু বিষয়ে নিশ্চয়তা চান। তারা চাইচেন সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পর্রবতী ৯০ দিনের পর নির্বাচন।
সংলাপে নেত্রী বলেছেন, আপানারা নির্বাচনে আছেন। এখানে কারচুপি জালিয়াতি হবে না। বিদেশী পর্যবেক্ষক যে কোন ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবে। তবে ইসির সমস্যা না হলে। বৈঠকের পরেও প্রধানমন্ত্রী তাদের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের প্রস্তাবের মধ্যে একটা বিরাট ফারাক রয়েছে। তবে আর আলোচনার কোন সুযোগ নেই।
আমি মনে করি, সংলাপে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আগামী কাল প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে সব জানিয়ে দিবেন। তারা পথযাত্রা করতে গিয়ে আবার যদি বোমাবাজি ও অরাজকতা সৃষ্টি করে তাহলে আমরা বসে থাকবো না। তারা খালেদা জিয়ার জামিন চেয়েছেন। আমরা বলেছি, এই মামলা ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছে। এখন আদালত তাকে দণ্ড দিয়েছে। আদালত যদি জামিনে মুক্তি দেয় আমাদের কোন সমস্যা নেই।
প্রসঙ্গত, সংলাপে বসার আগে সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উভয়েই ‘প্রত্যাশা পূরণের আশাবাদ’ ব্যক্ত করেন। প্রথম দফায় অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়েই দ্বিতীয় দফায় সংলাপ হয় বলে জানা যায়।
নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যে ধারাবাহিক সংলাপ চলছে, তার মধ্যে শুধু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গেই দ্বিতীয় দফায় সংলাপ হলো ক্ষমতাসীনদের।
এর আগে সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবির মধ্যে নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহার, সভা-সমাবেশের বাধা না দেওয়া ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন ক্ষমতাসীন নেতারা। কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে কিংবা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়গুলো অমীমাংসিত রয়ে যায়। আজকে সেইসব বিষয়েই আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।