নিজস্ব প্রতিনিধি: দেবহাটায় অসহায় বৃদ্ধার ওয়ারেশকাম সার্টিফিকেট না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে উপজেলা ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ওই অসহায় বৃদ্ধা ছকিনা খাতুন (৮১)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের আক্কাজ আলী মোল্ল্যা পেশায় ছিলেন একজন সাবেক ভূমি কর্মকর্তা। তিনি ২য় বিয়ে করেন সদর উপজেলার ধুলিহর গ্রামে। বিয়ের পর ২য় স্ত্রী ছকিনা খাতুনকে নিয়ে দেবাহাটার নওয়াপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। ১ম স্ত্রীর সাত পুত্র সন্তান ও ২য় স্ত্রীর চার পুত্র সন্তান। মোট ১১ জন পুত্র সন্তান আছে। ১৯৯৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চাকুরি করাকালীন সময় আক্কাজ আলী মোল্ল্যা মৃত্যুবরণ করেন।
স্বামীর মৃত্যুর পর ১ম স্ত্রী ২য় স্ত্রীকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনের কারণে ২য় স্ত্রী ধুলিহরের পিতার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন ও মাঝে মধ্যে নওয়াপাড়া স্বামীর বাড়িতে বেড়াতে যেতেন আবার পিতার বাড়িতে চলে আসতেন। একপর্যায়ে ২য় স্ত্রী ছকিনা খাতুনকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে ১ম স্ত্রী ও তার পুত্র সন্তানরা মিলে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ২য় স্ত্রী ছকিনা খাতুন তার স্বামীর সম্পত্তি নিতে গেলে বাধে বিপত্তি। নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুল ইসলামের কাছে ওয়ারেশকাম সার্টিফিকেট নিতে গেলে তিনি দিলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোনায়েম তা না দিয়ে ৫মাস বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা শুরু করে।
পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ২য় স্ত্রী ছকিনা খাতুন স্বামী আক্কাজ আলী মোল্ল্যাকে তালাক দিয়ে মর্মে একটি ১৯৯৭ সালের ভূয়া এ্যাফিডেফিটের ঘোষণা পত্র দেখায় এবং ওয়ারেশকাম সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে তিনি কোন বৈধ তালাকনামা দেখাতে পারেননি।
ঘটনার পর ছকিনা খাতুনের ছেলে আমজাদ হোসেন গত ২৮জুলাই উপজেলা ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান যাচাই পূর্বক জরুরী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেও চেয়ারম্যান তার সিদ্ধান্তে থাকে অটল থাকে। গত ১৯আগষ্ট সদ্য যোগদানকারী মানবিক ইউএনও হিসেবে পরিচিত কে,এম আবু নওশাদের সাথে ঘটনা বললে সাথে সাথে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেনকে ফোনে উভয়পক্ষকে বসিয়ে শুনে বুঝে ওয়ারেশকাম সার্টিফিকেট দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এব্যাপারে অসহায় বৃদ্ধা ছকিনা খাতুন বলেন, আমার স্বামী আক্কাজ আলী মোল্ল্যা মৃত্যুবরণ করেন ১৯৯৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে ১৯৯৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী ভূয়া এ্যাফিডেফিট দেখাচ্ছে, তা আমার করা নয়। আমি আমার জীবদ্দশায় কখনও কোর্টের বারান্দায় যায়নি। ওটা ভূয়া ও জাল। স্বামীর সম্পত্তি থেকে আমাকে বঞ্চিত করতে জালিয়াতির মাধ্যমে ওই এ্যাফিডেভিট করা হয়েছে। তবে গত ১০ আগষ্ট জীবনে প্রথম কোর্টে গিয়ে আমি একটি সঠিক এ্যাফিডেভিট করেছি। তাছাড়া স্বামীর মৃত্যুর পর কোন স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারে? এ প্রশ্ন রেখেছেন তিনি সকলের কাছে।
এব্যাপারে নওয়পাড়া ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, আগামী সপ্তাহে আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে বসবো। তারপর এর সমাধান করবো।

