দেশের খবর: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারপ্রতি সর্বোচ্চ ব্যয় ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একজন প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয় ২৫ লাখ টাকা বহাল রাখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অনুসারে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোটার রয়েছে এমন আসনের প্রার্থীরা ভোটারপ্রতি ব্যয় করতে পারবেন মাত্র তিন টাকা ৩৪ পয়সা।
ইসির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আরপিওর ৪৪বি(৩) অনুযায়ী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ভোটারপ্রতি নির্বাচনী ব্যয় ১০ টাকা নির্ধারণ করা হলো। তবে শর্ত হলো যে ওই নির্বাচনী এলাকার ব্যয় সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না। এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল আট টাকা।
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, দ্রব্যমূল্যসহ দেশের সার্বিক ব্যবস্থা বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন ভোটারপ্রতি সর্বোচ্চ ব্যয় নির্ধারণ করে থাকে।
এদিকে গত ১ আগস্ট পর্যন্ত ইসির হালনাগাদ তথ্য অনুসারে দেশে মোট ভোটারসংখ্যা ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০। এর মধ্যে পুরুষ পাঁচ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৯ জন এবং নারী পাঁচ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৫১ জন। সবচেয়ে বেশি পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখের ওপরে ভোটার রয়েছে ১২টি আসনে। এর মধ্যে ঢাকা-১৯ (চারটি ইউনিয়ন বাদে সাভার উপজেলা) আসনে ভোটার সাত লাখ ৪৭ হাজার ৩০১ জন এবং গাজীপুর-২ আসনে সাত লাখ ৪৫ হাজার ৮৪১ জন। আর সর্বনিম্ন দুই লাখের নিচে ভোটার রয়েছে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা, এক লাখ ৭৮ হাজার ৭৮৫ জন), লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ উপজেলা, এক লাখ ৯৬ হাজার ৪২৮ জন) এবং পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া উপজেলা, এক লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৩ জন)। ঢাকা-১৯ আসনের ভোটারদের জন্য সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় হলে ভোটার প্রতি ব্যয় করা যাবে তিন টাকা ৩৪ পয়সা। আবার কম ভোটার থাকার পরও ঝালকাঠি-১ আসনের প্রার্থী ১৭ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫০ টাকার বেশি ব্যয় করতে পারবেন না।
রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ: এদিকে ইসির পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সারা দেশের ৬৪টি জেলার জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি এলাকার কিছু আসনে স্থানীয় বিভাগীয় কমিশনারকে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা জেলার ২০টি আসনের মধ্যে ৪ থেকে ১৮ নম্বর আসনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার। আর ১ থেকে ৩, ১৯ ও ২০ নম্বর আসনে এই দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকার জেলা প্রশাসক। চট্টগ্রামে ৪, ৫, ৮, ৯, ১০ ও ১১ নম্বর আসনে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবং বাকি আসনগুলোতে জেলা প্রশাসক রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ৫৮০-র মতো। তাঁদের বেশির ভাগই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ছাড়া কয়েকজন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকেও এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিব জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা প্রচারে নামতে পারবেন। এর আগ পর্যন্ত কোনো প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না। এ বিষয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে গতকাল চিঠি পাঠানো হয়েছে।