স্বাস্থ্য কণিকা: শীত হচ্ছে হাঁপানি রোগীদের প্রধান শত্রু, তাই শীত আসছে হাঁপানির রোগীরা সাবধান। কেননা, সারা বছর মোটামুটি ভালো থাকলেও এই সময়ে তীব্র হাঁপানির আক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ সমস্যার বহু কারণ থাকতে পারে।
যেমন, সময়ে সময়ে হঠাৎ ঠাণ্ডা হাওয়ার ঝাপটা, দিনে-রাতে বা সকালে-বিকেলে তাপমাত্রার আকস্মিক ওঠানামা, পরিবেশে উড়তে থাকা ধুলাবালু, ঝরা পাতার গুঁড়ো, ফুলের রেণু ইত্যাদি। বাতাসের শুষ্কতা ও ভাইরাসজনিত জ্বর বা ভাইরাল ফ্লুর আবির্ভাব। এই সবগুলোই হাঁপানি রোগীর চিহ্নিত শত্রু।
হাঁপানি মূলত শ্বাসতন্ত্রের একধরনের অতিসংবেদনশীলতা। জন্মগতভাবেই অনেকে ধুলাবালু, ঠাণ্ডা বাতাস, ফুলের রেণু, পশুপাখির লোম ইত্যাদি সহ্য করতে পারে না। এগুলোর সংস্পর্শে এলেই রক্তের কিছু কণিকা কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করতে থাকে, যার প্রভাবে শ্বাসনালি সংকুচিত হয়, প্রচুর তরল নিঃসৃত হয় আর শুরু হয়ে যায় শ্বাসকষ্ট।
হাঁপানি রোগীদের বুক থেকে বাঁশির মতো সূক্ষ আওয়াজ বেড় হয়। দম আটকে আসে। কফ হতে পারে। হাঁপানিতে আক্রান্ত ছোট শিশুদের এ সময় খুবই কষ্ট হয়। তাই আগে থেকেই সাবধান হওয়া ভালো।
যেভাবে যত্নে থাকবেন:
খুব ভোরে বা সন্ধ্যার পর আবহাওয়া হঠাৎ করেই একটু শীতল হয়ে যাবে এখন। এই সময় একটু ভারী কাপড় পরা যেতে পারে। যেমন ফুলহাতা জামা বা ফুলপ্যান্ট। দরকার হলে জামার নিচে একটা পাতলা গেঞ্জি। রাতে পাখা বা এসি ছাড়লেও তার মাত্রা কমিয়ে দিন। পাতলা একটা কাঁথা গায়ে দিয়ে নেওয়া ভালো।
মাথায় এবং নাক-মুখ দিয়ে প্রবেশ করা ঠাণ্ডা ও শুষ্ক বাতাসই ক্ষতি করে বেশি। তাই ঠাণ্ডা হাওয়ায় বেড় হতে হলে একটা স্কার্ফ, টুপি বা নাকে-মুখে কাপড় জড়িয়ে নেওয়াই ভালো। এতে ধুলাবালুও খানিকটা আটকাবে।
ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল নয়। ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানিও এখন থেকে পরিহার করুন। যারা বাইরে ব্যায়াম করতে বা হাঁটতে যান, তারা সময়টা বদলে ফেলুন বা ঘরের ভেতর ব্যায়াম করা শুরু করুন। কেননা কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাস আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
অনেকেরই ভাইরাল ফ্লু হচ্ছে। তাদের এড়িয়ে চলুন। বাইরে থেকে ফিরে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। অন্যের ব্যবহার্য তোয়ালে, রুমাল, টুকিটাকি জিনিস ধরবেন না।
আপনার ইনহেলার ও ওষুধপত্রগুলো এবার দেখে নিন, মেয়াদ আছে কি না বা শেষ হয়ে গেছে কি না। শীতের শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শমতো ইনহেলার নিয়মিত ব্যবহার করা শুরু করে দিতে পারেন। বয়স্ক ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা এ সময় নিউমোনিয়া বা ফ্লুর টিকা নিয়ে নিতে পারেন।