অনলাইন ডেস্ক: রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে সদস্য দেশসমূহের উপস্থিতিতে উন্মুক্ত ভোটের মাধ্যমে ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইউ) যৌথভাবে আনীত একটি প্রস্তাব গৃহিত হয়েছে। ১৪২টি দেশ এই রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় ১০টি দেশ এবং ভোট প্রদানে বিরত থাকে ২৬টি দেশ।
রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর এ প্রস্তাব আনা হয়েছিল।
ওআইসি ও ইউ’র পক্ষে যথাক্রমে বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়া এই প্রস্তাব পেশ করে। ওআইসি ও ইইউ’র সকল সদস্যরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ও মেক্সিকোসহ মোট ১০৩টি দেশ এই প্রস্তাবটি কো-স্পন্সর করে।
ঢাকায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, রেজুলেশনটি ভোটে যাওয়ার আগে এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে ওআইসির পক্ষে তুরস্ক ও ইইউ’র পক্ষে অস্ট্রিয়া বক্তব্য রাখে। তুরস্ক ও অস্ট্রিয়ার বক্তব্য সমর্থন করে রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দানের আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও বাংলাদেশ।
এসময় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন প্রস্তাবটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে সদস্যরাষ্ট্রসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকারের নীতিগত অবস্থানের কথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আবারও মনে করিয়ে দেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ধরে রাখা বা জোর করে ফেরত পাঠানো এর কোনটিতেই একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের কোনও স্বার্থ নেই।’
রাখাইনে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। গত ১৪ নভেম্বর এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘এখনও রাখাইন রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ নয়। এ অবস্থায় তাদেরকে সেখানে পাঠানো হলে আবারও রোহিঙ্গাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।’
উল্লেখ্য, গেল বছরের ২৫ অগাস্ট থেকে পরবর্তী কয়েকমাসে রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞের মুখে সাগর ও সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।