মাত্র ১৭ বল! ঠিক ১৭টা বল লাগল ম্যাচের রূপ বদলে দিতে। ২ উইকেটে ১৬৫ রানে ছুটছিল বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে হাসছিল দল। সে হাসিটাই একটু পরে ঢেকে গেল গাঢ় অন্ধকারে। ১৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে হঠাৎই ভগ্নদশা ব্যাটিংয়ের। দুই অভিষিক্তের তরুণ কাঁধে এখন বিষম ভার। নুরুল-নাজমুলের অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটিতে আপাতত ভাসছে আশার ডিঙি নৌকা। ৫ উইকেটে ২২৫ রান নিয়ে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিনের চা বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ।
অথচ ভাগ্যকে পাশে নিয়ে সাকিব-সৌম্য পাল্টা আক্রমণই করছিলেন। প্রথমে ফিরলেন সৌম্য। শুরু থেকে দারুণ আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেছেন। নিউজিল্যান্ডের পেসারদের কখনোই থিতু হতে দেননি আগ্রাসী মানসিকতা দেখিয়ে। ইনিংসটা যখনই পরিণতি পাবে মনে হচ্ছিল, ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিটা যখন সেঞ্চুরিতে রূপ নেওয়ার অপেক্ষায়, তখনই ট্রেন্ট বোল্টের আঘাত। কিউই পেসারের বলটি একটু আলসে ভঙ্গিতে পুশ করাতেই ঝামেলাটা হলো।
শর্ট কভারে ডাইভিং ক্যাচে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম আউট করে দিলেন সৌম্যকে (৮৬)। ১০৪ বলের ইনিংসটিতে ১১টি চার মেরেছেন এই ওপেনার। তাঁর আউটের মধ্য দিয়েই সাকিবের সঙ্গে জুটিটা থামল ১২৭ রানে। ৩৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিল এই জুটিই। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে যেটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এরপর নামা সাব্বির রহমানও আক্রমণকেই মানলেন মূল অস্ত্র। চার মেরেছেন মাত্র একটি, তবে যে ৮ বল টিকে ছিলেন তার প্রথম ৭ বলেই শট খেলার চেষ্টা ছিল তাঁর। রক্ষণাত্মক হলেন অষ্টম বলে। বোল্টের লাফিয়ে ওঠা সে বলেই ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে (৭)। তবু ভরসা হয়ে ছিলেন সাকিব। কিন্তু তাঁর আউটটাই হতাশ করল বেশি। লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে যাওয়া একটা বলে আলতো ছোঁয়া লাগালেন। এতটাই আলতো শব্দ হলো যে আম্পায়ার পল রাইফেল নিউজিল্যান্ডের আবেদনে সাড়াই দিলেন না। কিউইরা রিভিউ নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে নিতেই ‘ওয়াক’ করলেন সাকিব।
১৬৫ রানে ২ উইকেট থেকে মুহূর্তেই ১৭৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কাঁপছে তখন বাংলাদেশ।
এরপর জুটি বেঁধেছেন দুই অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন ও নুরুল হাসান। অভিষেকের সুখস্মৃতিটা ৪ রানেই থেমে যেতে পারত উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুলের। বোল্টের বলে তৃতীয় স্লিপে সহজ ক্যাচটা সাউদি হাতছাড়া করাতেই বাঁচলেন। বাংলাদেশও স্বস্তি পেল কিছুক্ষণের জন্য। কিন্তু কতক্ষণ?