খেলার খবর: কেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি দল বলা হয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন সাকিব-মিরাজরা। সিলেটে বছরের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ঝড় উঠল। ছোটখাট ঝড়ের মাঝে যেটি টর্নেডোতে রূপ নিল তার নাম শাই হোপ। ওয়ানডে সিরিজে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানো এই ওপেনার ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে একাই হারিয়ে দিলেন বাংলাদেশকে। স্বাগতিকদের দেওয়া ১৩০ রানের টার্গেট স্পর্শ করতে উইন্ডিজের লাগল মাত্র ১০.৫ ওভার। ৮ উইকেটের বড় জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল তারা।
১৩০ রানে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ধুন্ধুমার ব্যাটিং শুরু করেন এভিন লুইস এবং শাই হোপ। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে ৩ ওভারেই ক্যারিবীয়দের এসে যায় ৪৫ রান। অতঃপর সাইফউদ্দিনের বলে ১১ বলে ১৮ করা এভিন লুইস আরিফুল হকের তালুবন্দি হলে ভাঙে ৫১ রানের বিধ্বংসী উদ্বোধনী জুটি। এতে তাদের রান তোলার গতি মোটেও কমেনি। শাই হোপ যেন আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। মাত্র ১৬ বলে ৩ চার এবং ৬ ছক্কায় তুলে নেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি।
দলীয় ৯৮ রানে ধ্বংসাত্মক হোপকে অবশেষে থামান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ততক্ষণে অবশ্য ২ বলে ৫৫ করা হোপ দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছেন। কিমো পলকে নিয়ে নিকোলাস পুরান দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ১০.৫ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ক্যারিবীয়রা। পুরান ১৭ বলে ২৩* এবং পল ১৪ বলে ১ চার ৩ ছক্কায় ২৯* রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
এর আগ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯ ওভারে ১২৯ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। শুরু থেকেই ক্যারিবীয়দের শর্ট বলের মুখে খাবি খেতে থাকেন ব্যাটসম্যানরা। ওশান টমাসের করা ইনিংসের প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তামিম ইকবাল। শুরুর নড়বড়ে অবস্থা সামলে নিতে পারেননি দেশসেরা ওপেনার। কটরেলের একটি শর্ট বলে ব্যক্তিগত ৫ রানে বাজে শটে ধরা পড়েন ব্র্যাথওয়েটের হাতে। ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
অপর ওপেনার লিটন দাসও ক্যাচ দেন শর্ট বলে। দারুণ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করা এই ব্যাটসম্যান থমাসের বলে দৃষ্টিকটু শটে ক্যাচ তুলে দেন ব্র্যাথওয়েটের হাতে। ৩১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক সাকিব উইকেটে এসেই পরপর দুটি বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ধস থামানো যাচ্ছিল না। আগের দুই ব্যাটসম্যানকে দেখে শিক্ষা নেননি ছন্দে থাকা সৌম্য সরকার। এক বাউন্ডারিতে ৫ রান করে সেই কটরেলের শর্ট বলে ধরা পড়েন পাওয়েলের হাতে। এরপরেই ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম রান-আউট হয়ে গেলে বিপদ আরও বেড়ে যায়। তবে একপ্রান্তে ধুন্ধুমার ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক সাকিব।
কিন্তু মুশফিকের পর বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ (১২)। কটরেলের তৃতীয় শিকার হয়ে হোপের গ্লাভসবন্দি হয়েছেন তিনি। রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। দলে সুযোগ পাওয়া আরিফুল হক অ্যালানের শিকার হওয়ার আগে করেন ১৭ রান। এর মাঝেই ৪০ বলে ক্যারিয়ারের ৮ম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। কটরেলের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ৪৩ বলে ৮ চার ২ ছক্কায় ৬১ রান। সাইফউদ্দিন (১), মিরাজ (৮), আবু হায়দার (১*) এবং মুস্তাফিজুর রহমান(০) কেউই দুই অংক স্পর্শ করতে পারেননি। শেলডন কটরেল নিয়েছেন ৪ উইকেট। ২ উইকেট নিয়েছেন কিমো পল।