অনলাইন ডেস্ক: সুস্থ দেহ ও দীর্ঘায়ু পেতে কে না চায়? আর সেজন্যই তো ডাচরা চালায় সাইকেল, সুইডিশরা পান করেন কফি আর পোলিশরা করেন ধর্মকর্ম। আসুন দেখে নেওয়া যাক ইউরোপীয়দের দীর্ঘায়ু পাওয়ার গোপন রহস্য।
সুইডেন
বন্ধুবান্ধব বা সহকর্মীদের নিয়ে নিয়মিত কফি পান করা সুইডেনে খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। অ্যামেরিকান ন্যাশনাল ক্যানসার ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যারা দৈনিক পাঁচ কাপ কফি পান করেন, তাদের কার্ডিওভাসকুলার, ডায়েবেটিস এবং পাকস্থলির ক্যানসারের ঝুঁকি কমে এবং এর সঙ্গে বাড়ে আয়ুও।
পারিবারিক বন্ধন গুরুত্বপূর্ণ
ইাটালিয়ানরা পরিবারের লোকজন নিয়ে আনন্দে থাকতে খুব ভালোবাসেন। তাদের হৃদয়ে দেশপ্রেম এবং পরিবারের স্থানই সবার আগে। হ্যাঁ, পারিবারিক বন্ধন নাকি দীর্ঘায়ু পেতে সাহায্য করে – এমন তথ্যই জানা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়েগো বিশ্ববিদ্যালের এক গবেষণায়।
পোলিশরা খুবই ধার্মিক
পোল্যান্ডের জনগণের কাছে ধর্ম এবং ধর্মের প্রতি বিশ্বাস একটি বড় ব্যাপার। মনেপ্রাণে নিজধর্মে বিশ্বাস করে ধর্মকর্ম বা প্রার্থনা করলে নাকি মৃত্যুহার কমে। যার প্রমাণ পাওয়া যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণার ফলাফল থেকে।
বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছে স্পেন
অ্যামেরিকার ইন্সটিটিউ অফ হেল্থ মেট্রিক্স-এর তথ্য অনুযায়ী, জাপানিদের গড় আয়ু ৮৫ দশমিক ৮ বছর বলে যে বিশ্ব রেকর্ড ছিল, তা এবার অতিক্রম করে ফেলেছেন স্প্যানিশরা। এর কারণ খাদ্যাভ্যাস। নিয়মিত ভূমধ্যসাগরীয় খাবার, যেমন গ্রিল করা তাজা শাক-সবজি, মাছ, জলপাইয়ের তেল খাওয়ার কারণেই আজ বিশ্বে স্প্যানিশদের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি।
পর্তুগাল
আর কোনো দেশে পর্তুগালের মতো এত তাড়াতাড়ি গড় আয়ু বাড়েনি। গত প্রজন্মের তুলনায় এখন তাদের গড় আয়ু বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ ভাগ। আয়ু বাড়ার গোপন রেসিপি হচ্ছে, রেডিমেড বা তৈরি খাবার কম খাওয়া এবং খাবারের তালিকায় মাছের পরিমাণ বেশি ও লাল মাংসের পরিমাণ কম রাখা।
হল্যান্ড
শোনা যায় হল্যান্ডে মানুষের চেয়ে সাইকেলের সংখ্যা বেশি। আমস্টারডামের রাস্তায়গুলোতে তো শতকরা ৭০ ভাগ মানুষই সাইকেলে চলেন। বলা বাহুল্য, নিয়মিত সাইকেল চালালে ডায়েবেটিস এবং টিউমারের ঝুঁকি কমে। হল্যান্ডের বিখ্যাত উটরেশ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক সমীক্ষায় জানা গেছে যে, সপ্তাহে মাত্র ৭৪ মিনিট সাইকেল চালানোর মধ্য দিয়ে গড় আয়ু বাড়ে প্রায় ছয় মাস।
ফ্রান্স
ইউরোপে ফরাসিদের ‘ভোজন রসিক’ হিসেবে নাম রয়েছে। বিশেষ করে খাবারের সাথে তারা ‘রেড ওয়াইন’ পান করতে ভালোবাসেন। এছাড়া রাতে তারা ঘুমানও একটু দীর্ঘসময় ধরে। আর এই দু’টোই নাকি ধমনী এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। ফলে মৃত্যুঝুঁকি কমে, বাড়ে আয়ু।
আইসল্যান্ড
দীর্ঘজীবী হতে আইসল্যান্ডের জনগণ খাবার টেবিলে নিয়মিত ম্যাকরেল, স্যামন, হেরিং-এর মতো সামুদ্রিক মাছ রাখেন। এগুলো হৃদরোগ এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়৷ চীনের শেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণা থেকে এই তথ্যটি জানা যায়। এই তথ্যগুলো প্রকাশ করে জার্মানির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন বিল্ড ডেয়ার ফ্রাউ।
তথ্যসূত্র: ডয়চে ভেলে