শিক্ষা সংবাদ: শিক্ষা প্রশাসনে বড় ধরনের সংস্কার আনা হচ্ছে। নতুন করে পদ সোপান তৈরির মাধ্যমে ক্যাডার পদে যুক্ত করা হবে তৃতীয় ও দ্বিতীয় গ্রেড। দ্বিতীয় গ্রেডে ১৫টি এবং তৃতীয় গ্রেডে ৪২৯টি মিলে এ দুটি গ্রেডে পদ সৃষ্টি করা হবে ৪৪৪টি। এছাড়া প্রভাষক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত আরও সাড়ে ১২ হাজার পদ সৃষ্টি করা হবে। সব মিলিয়ে পদসংখ্যা দাঁড়াবে ১২ হাজার ৯৪৪টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দেশে শিক্ষা ক্যাডারে মোট পদ রয়েছে দেড় হাজার। এর মধ্যে অধ্যাপকের অনুমোদিত পদ ৫১৫টি, সহযোগী অধ্যাপক দুই হাজার ২০০ এবং সহকারী অধ্যাপক পদ রয়েছে চার হাজার ৩০০-এর বেশি। এ ছাড়া প্রভাষক পদ রয়েছে ৮ হাজারের বেশি। সব মিলিয়ে মোট ক্যাডার পদ ১৫ হাজার।
সম্প্রতি এই পদসংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। প্রভাষক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত নতুন করে সাড়ে ১২ হাজার পদের জন্য প্রস্তাব করা হয় মন্ত্রণালয়কে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পদ সৃষ্টির প্রস্তাব পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। এই প্রস্তাব পাওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে চাহিদা চায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালকের পদটি প্রথম গ্রেড। এছাড়া অন্য কোনও প্রথম গ্রেডের পদ নেই শিক্ষা ক্যাডারদের জন্য। অবশ্য সংস্কারের পরও প্রথম গ্রেডের পদসংখ্যা অপরিবর্তিত থাকছে।
সূত্র জানায়, এর আগে সরাসরি দ্বিতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হতো সিলেকশন গ্রেডের মাধ্যমে। ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন কাঠামোতে সিলেকশন গ্রেড না থাকায় এখন সে সুযোগ নেই। চতুর্থ গ্রেডেই আটকে থাকছেন শিক্ষা ক্যাডাররা। এই পদ সোপান তৈরির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষা ক্যাডারে চতুর্থ গ্রেডের পরে আর উপরে ওঠার পদ নেই। আগে সিলেকশন গ্রেড দিয়ে দ্বিতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হতো। জাতীয় বেতন স্কেলের পর সে সুযোগও নেই। তাই দ্বিতীয় গ্রেডে ১৫টি পদের প্রস্তাব করা হবে। আর তৃতীয় গ্রেডে অধ্যাপক পদের অর্ধেক পদ সৃষ্টি করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চতুর্থ গ্রেডের রয়েছেন ৮৫৮ জন। তৃতীয় গ্রেডের জন্য এর অর্ধেক অর্থাৎ ৪২৯টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হবে। আর দ্বিতীয় গ্রেডের জন্য প্রস্তাব করা হবে ১৫টি। এছাড়া অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক পদসহ আমরা মোট সাড়ে ১২ হাজার পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেবো।’
মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘পদ সোপান করে নতুন পদ সৃষ্টি করা গেলে তদবির ও দুর্নীতি থাকবে না। শিক্ষা ক্যাডাররা সম্মানিত হবেন। জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে আমরা শিগগিরই পদ সোপান তৈরি করবো।’
একধিক শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষা ক্যাডার নানা বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। এই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের উপরে ওঠার কোনও সুযোগ রাখা হয়নি। এ বৈষম্যের অবসান হওয়া প্রয়োজন। এতে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। শিক্ষকদের তদবির ও দুর্নীতিমুক্ত করাও সম্ভব হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট