দেশের খবর: রাজধানীতে ১০ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় এখনও কোনও মামলা করা হয়নি।
রাজধানীর একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে লেখাপড়া করে শিশুটি।
শিশুর মা অভিযোগ করে বলেন, শিশুটির বাবার নাম সাহেদুল্লাহ চিশতী। তিনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা। আড়াই বছর আগে তাদের আইনগতভাবে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর থেকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় থাকতেন শিশুটির মা। খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় থাকতেন বাবা সাহেদুল্লাহ। তাদের দুই সন্তান। তালাকের পর প্রায় ৬মাস বাবার কাছে ছিল শিশু দুটি। পরে মায়ের জিম্মায় যায় তারা।
মায়ের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে বাবা সাহেদুল্লাহ শিশুটিকে বাসা থেকে গাড়িতে করে স্কুলে নিয়ে যায়। পরে দুপুরে শিশুটি একাই স্কুল থেকে বাসায় আসে। সে জানায় তার পেট ব্যাথা। কারণ জানতে চাইলে বাবাকে কিছু না বলার শর্তে মাকে জানায়, রাস্তায় গাড়ির মধ্যে বাবা তাকে নির্যাতন করেছে। এর আগেও বাসায় একাধিকবার শিশুটির সঙ্গে বাবা একই কাজ করেছে বলেও সে মাকে জানায়।
সাংবাদিকদের শিশুটির মা জানান, প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন যে শিশুটি ধর্ষণের শিকার এবং এটিই প্রথমবার নয়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত বাবা সাহেদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘তালাকের আগে থেকেই তাদের মায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি হয়। সে নিজেই আমাকে তালাক দেয়। তারপর থেকেই কয়েকটি থানায় আমার বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করে। থানা পুলিশ কোন প্রমাণ পায়না। পরে মামলা তুলে নেয়।’
এই বাবা আরও বলেন, ‘শুনেছি আমার মেয়ের শরীরে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। কে আমার মেয়ের এমন সর্বনাশ করেছে? তার বিচার চাই। মেয়ের মা অন্য কাউকে দিয়ে খারাপ কাজ করিয়ে আমার উপর দোষ চাপাচ্ছে।’ বিষয়টি তদন্ত করে দেখতেও অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়া দুই সন্তানকে নিজের জিম্মায় পেতে আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। আর এই খবর পেয়েই তার সাবেক স্ত্রী এসব অভিযোগ দিচ্ছেন বলেও দাবি তার।
তবে ঢামেকের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক পরীক্ষায় শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। চিকিৎসকরা আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার অপেক্ষা করছেন।
বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢামেক ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম জানান, মঙ্গলবার একটি শিশু ভর্তি হয়েছে। আজ শিশুটির বয়স নির্ধারণের জন্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সব পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান তিনি। আজই শিশুটিকে রমনা থানায় পাঠিয়ে মামলার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান এই চিকিৎসক। মামলার পর শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে।