বিদেশের খবর: ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের রক্ষায় ১৪ হাজার বাঙ্কার নির্মাণ শুরু করছে ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে যেকোনো যুদ্ধ বা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে বাসিন্দাদের যাতে স্থানান্তর না করেই নিরাপদে সেখানে রাখা যায় তাই এই ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল ও সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে, ভারত যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখতে বাঙ্কার তৈরি করছে। ভারতের হামলার পর পাকিস্তান পাল্টা হামলা করলে দুই দেশ থেকেই প্রতিরোধের ঘোষণা আসে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত যেকোনো সময় পাকিস্তানের হামলার আশঙ্কা করছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহ থেকেই বাঙ্কার নির্মাণের সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা ও হামলার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে তা কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
পাকিস্তানের দৈনিক ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে তারা একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বুধবার সকালে পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। অপরদিকে ভারতে বলে তারাও পাকিস্তানের একটি বিমানকে ভূপাতিত করে। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কোথায় গিয়ে থামে তা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব।
তার আগে গত মঙ্গলবার পাকিস্তান সীমান্তে ঢুকে বিমান হামলা চালায় ভারত। ভারতীয় বিমানবাহিনী ১২টি মিরাজ ২০০০ বিমান দিয়ে হামলা চালায় বলে দাবি করছে। তারা মাত্র ২১ মিনিটের ওই হামলায় বিমান থেকে ১০০০ কেজি ওজনের বোমা বর্ষণ করেছে।
বুধবার পাকিস্তানের হামলার পর তিন বাহিনী ও গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা জানা যায় নি। এদিকে গতকাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে।
তবে সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ইমরান খান ভারতকে উত্তেজনা কমাতে পুনরায় আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তিনি ভারতকে হুশিয়ার করে এও বলেছেন, যদি তেমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে নরেন্দ্র মোদি কিংবা আমি কারোরই কোনো কিছু করার থাকবে না।
পাক-ভারতের এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ও পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষিতে দুই দেশেকে শান্ত ও সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পশ্চিমা বিশ্বসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। তারা দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে বসে সমঝোতা করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, যেন আর কোনো সামরিক অভিযান বা হামলার ঘটনা না ঘটে।