দেশের খবর: মৌলভীবাজারের শেরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। মো. ওয়াসিম হাসনান (২১) নামে ওই শিক্ষার্থী সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চতুর্থ বর্ষে পড়তেন। ওয়াসিমের বন্ধুদের অভিযোগ, ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বাসের হেলপার তাকে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দিয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হন রাকিব নামের একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও এক শিক্ষার্থী। ওয়াসিমের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামে।
শনিবার বিকেল ৫টার দিকের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর প্রবেশদ্বার হুমায়ুন রশীদ চত্বরে সড়ক অবরোধ করেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
নিহত ওয়াসিমের বন্ধু রাকিব, নয়ন শুভ ও অনির্বাণ জানান, তারা ১১ বন্ধু নবীনগরের গোপলালবাজার থেকে ওই বাসে ওঠেন। ওঠার সময়ই তারা ভাড়া কম আছে বলে চালক ও হেলপারকে জানিয়েছিলেন। এরপর তারা ভাড়া বাবদ ৬০০ টাকা পরিশোধ করেন। এ সময় ভাড়া নিয়ে বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর তারা শেরপুর নেমে যেতে চান। নামার সময় হেলপার ও চালক তাদের গালাগাল করেন। এ সময় নিহত ওয়াসিম ও আহত রাকিব হোসেন প্রতিবাদ করেন। তাদের বাকি নয় বন্ধু তখন বাস থেকে নেমে স্ট্যান্ডে অবস্থান করছিলেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হেলপার ওয়াসিম ও রাকিবকে ধাক্কা দিয়ে বাসের দরজা লাগিয়ে দেন এবং চালক বাস চালাতে শুরু করেন। এতে রাকিব সড়কে ছিটকে পড়েন এবং ওয়াসিমের পা দরজার সঙ্গে আটকে যায়। এক পর্যায়ে তিনি বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হন। পরে দুজনকেই সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ইনচার্জ এসআই কামরুল ইসলাম বলেন, উদার পরিবহনের ওই বাস জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপার পালিয়েছে।
এদিকে বাসচাপায় ওয়াসিমের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাতে সিলেট নগরীর প্রবেশদ্বার হুমায়ুন রশীদ চত্বরে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বাসের চালক-শ্রমিকের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে তারা উদার পরিবহনের কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দেয়।
অবরোধের ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান আসা বাস সিলেটে প্রবেশ করতে এবং ছেড়ে যেতে পারছে না। সিলেটের আঞ্চলিক সড়কগুলোতে যাতায়াতকারী বাসসহ সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ চলাকালে বাসস্ট্যান্ড থেকে পরিবহন শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন কৃষি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান। কৃষি অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী অর্ঘ্য চন্দ জানান, তার মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার চিকিৎসা চলছে।