রাজনীতির খবর: বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামকে উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের মেরিন চর এলাকায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ওই সংবর্ধনায় তিনি স্থানীয় এক মুরুং তরুণীর সঙ্গে ‘অশালীন’ ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার পর তা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইতোমধ্যে এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
শনিবার (২৩ মার্চ) সকালে নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আবুল কালামকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে রশিদ নামে আলিকদমের এক বাসিন্দা জানান, শনিবার সকালে দুর্গম কুরুক পাতা ইউনিয়নের মেরিন চর এলাকায় নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা শেষে এক মুরুং তরুণীর সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। পরে তিনি ওই তরুণীর বাড়িতে দুপুরের খাবারও খান।
আবুল কালাম ওই ছবি পোস্ট করার পরপরই আজ সাদিয়া নাসরিন নামের একজন বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘এই ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে তার নাম আবুল কালাম। বান্দরবনের আলীকদম উপজেলার নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সে বিজয়ী হয়েছে। তো, চেয়ারম্যান হইলে সম্বর্ধনা নিতে যাইতে হয়। সেও গেসে ম্রো আদিবাসীদের পাড়ায় সংবর্ধনা নেওয়ার জন্য। গিয়ে কী করছে? ফুলের মালা দিতে যাওয়া এই সাধারণ পাহাড়ি মেয়েটার গায়ের উপর উঠে গেছে। জনসমক্ষে মেয়েটারে জাপটায় ধরছে। মেয়েটার এক্সপ্রেশনই বলে দিচ্ছে কী পরিমাণ যন্ত্রণাদায়ক আর অপমানজনক ছিল সেই মুহূর্তটুকু তার জন্য এবং পরবর্তী কতদিন তার এই গাগোলানো ভাব, এই ট্রমা থাকবে সেটাও আমি বুঝতে পারি! আপনারা বুঝতে পারেন? পারলে কেউ কি আমাকে বলবেন, কোন ক্ষমতা বলে একজন জনপ্রতিনিধি প্রকাশ্যে একজন নারীকে এভাবে যৌন নিপীড়ন করতে পারেন? কোনও ধরনের আইনের আওতায় কি তার এই বদমাইশির শাস্তি হবে?’
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে আলিকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম বলেন, ‘কুরুক পাতা ইউনিয়নের মেরিন চর এলাকায় আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ আমাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। যে মেয়ের সঙ্গে ছবি তুলেছি, তার পরিবারের সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই আমার পারিবারিক সম্পর্ক। মেয়েটিকে আমি ছোটবোনের মতো দেখি। এখানে জোর করে ছবি তোলা হয়নি। আজও বোনের মতোই তাকে সান্ত্বনা দিয়ে ছবি তুলেছি। এ ছবি তোলার সময় পাশেই তার মা, বাবা ও বড় ভাই ছাড়াও পাড়ার শত শত লোকজন ছিল। আমি যে ছবি তুলেছি তা নিয়ে তার পরিবারের বা পাড়ার কারও কোনও ধরনের আপত্তি ছিল না। তাছাড়া আমি এ উপজেলায় দীর্ঘ কয়েক বছর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলাম, এখনও আছি। এ উপজেলার সব মানুষ আমাকে চেনে। আমার এ বোনটি নির্বাচনের সময় আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে, কেঁদেছেও। আর আমি তাকে এভাবে শত শত মানুষের সামনে সান্ত্বনা দিয়েছি। আমাদের ভাই-বোনকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে আমি তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবো।
এ বিষয়ে আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকউল্লাহ বলেন, ‘আমি ছবি দেখেছি। তবে এখনও পর্যন্ত কারও কোনও আপত্তি বা অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। মেয়েটি কোথায় থাকে আমি এখনও সে খোঁজও পাইনি। কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’
তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করা হলেও মেয়ের বা মেয়ের পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন