স্বাস্থ্য ও জীবন: এখন প্রচণ্ড গরম ঘরে বাইরে। এই গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পরছেন। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অনেকের শারীরিক অনেক অসুবিধা হচ্ছে। অনেককেই দেখা যায়, গরমে রাতে ভালো ঘুম না হওয়ায় সকালে দেরি করে উঠে বা তারাহুরো করে না খেয়েই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের সকালের নাস্তা ঠিক মতো করা হচ্ছে না। আবার অনেকের গরমের কারণে নাস্তা না খাওয়ার অনিচ্ছা থেকেও তাদের নাস্তা খাওয়া বাদ পরে যাচ্ছে।
সকালের নাস্তা বাদ দিলে এই গরমে শরীর আরও বেশি খারাপ হয়ে যাবে। তাই গরম বেশি হলেও সুস্থতার জন্য সকালের নাস্তা খাওয়া অনেক জরুরি।
রাতে ভারী খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন :
রাতে ভারী খাবার না খেলে আপনার ঘুমানোতে অনেক সাহায্য হবে। কেননা ভারী খাবার খেলে পেটে অসস্তি হয়। হজম দেরিতে হয়। তাই হালকা খাবার রাত ৮ থেকে ৮.৩০টার মধ্যে সেরে ফেলুন।
সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন :
সকালে একটু তাপমাত্রা কম থাকে। সূর্য ভালোভাবে উঠে গেলে ৯টার পর থেকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। তাই সকাল সকাল উঠে ৮টার মধ্যে নাস্তা করে ফেলুন।
সকালের নিয়মিত কিছু অভ্যাস এই গরমে ত্যাগ করুন :
অনেকেই ঘুম থেকে উঠে লেবু মধু পানি খান। তারা অবশ্যই এই গরমে এই অভ্যাস থেকে বিরত থাকুন। মধু শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর লেবু অনেকের গ্যাস বা এসিডিটি করে। তাই এই গরমে সকালে উঠে এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি আপনার শরীরকে চাংগা করবে। আবার যারা খালি পেটে চা বা কফি পান করেন, এই গরমে তারাও এই চা কফি বাদ দিলে অনেক সুস্থ থাকবেন। তবে হ্যাঁ, সামান্য মধু লেবু দিয়ে বাইরের থেকে বাসায় ঢুকার পর এনার্জির জন্য পান করা যাবে।
সঠিক নাস্তা নির্বাচন :
খুব আশ যুক্ত খাবার সুস্থ্যতার জন্য অনেক জরুরি। কিন্তু মনে রাখবেন বেশি আশ যুক্ত খাবার অনেকেই এই গরমে হজম করতে পারে না। যেমন ওটস দুধ বা ভুষি সমেত আটার রুটি। গরমের সবচেয়ে সঠিক নাস্তা হল নরম ও সহজ পাচ্য খাবার। যেমন নরম ভাত, পান্তা ভাত, চিড়া, সাগুদানা, সুজি, পাতলা সাদা আটার রুটি ইত্যাদি কার্বহাইড্রেট। প্রোটিন হিসেবে এই গরমে দুধের চেয়ে ছানা বা দই ভালো। এছাড়া সিদ্ধ ডিম ও আপনার নাস্তায় রাখতে পারেন। যাদের রুটি দিয়ে ডাল খাওয়ার অভ্যাস, তারা এই গরমে সকালের নাস্তায় ডাল এড়িয়ে চলাই ভালো। ডাল অনেক সময় হজমে সমস্যা করে বিশেষ করে বুট বা ছোলার ডাল। সব্জি সাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী হলেও অনেকে বেশি সব্জি সকালে খেলে এই গরমে হজম করতে পারেনা। তাই গরমের জন্য সকালে পেপে, চালকুমরা, ঝিংগা, চিচিঙ্গা ইত্যাদি নরম ও সহজ পাচ্য সব্জি ভালো। চর্বি যুক্ত খাবার গরমে অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন ডিম অমলেট, পারাটা, লুচি ইত্যাদি।
ফ্রুট ফ্রেশ জুস বা স্মুদি গরমের জন্য উপকারী। মাঠা বা ঘোল ঘরে বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। পাকা নরম ফল যেমন পেপে, বাংগি, কলা, আম ইত্যাদি সকালের ফল হিসেবে ভালো। তবে মধ্য সকালে টক ফল বা টক ফলের জুস ভালো। সকালের নাস্তাতে চা বা কফি এড়িয়ে চলা উত্তম। এই গরমে সকালের নাস্তার পর পানীয় হিসেবে বিশুদ্ধ পানি, ডাবের পানি বা ফলের ঘরে বানানো জুস সবচেয়ে ভালো।
গরমে সুস্থ থাকতে দিনের শুরু যেন হয় ঠিকঠাক। সুষম, সহজ পাচ্য ও ঘরে বানানো খাবারের কোনো বিকল্প নেই। আর হ্যাঁ, নাস্তা খেয়ে বের হওয়ার সময় পানির বোতলটি আর ছাতা নিতে ভুলবেন না।