রাজধানীর শাহজাহানপুরে গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় দেন। রায়ে দু’জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে উন্মুক্ত অবস্থায় থাকা নলকূপের পাশে খেলতে খেলতে পাইপের ভেতর পড়ে শিশু জিহাদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
জিহাদের পাইপে পড়ে যাওয়ার খবর দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। রাতভর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হয়। পরের দিন ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে।
অভিযান স্থগিত করার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই শিশুটিকে উদ্ধার করেন তিনজন স্বেচ্ছাসেবী। তাদের নিজস্ব তৈরি বিশেষ ধরনের জাল বা স্ক্যাচার ব্যবহার করে শিশুটিকে উদ্ধার করেন তারা। ঘটনার পরের দিন জিহাদের বাবা মো. নাসির ফকির বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মেসার্স এসআর হাউসের মালিক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে আবদুস সালাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের সিনিয়র সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (নলকূপ পরিদর্শন) মো. জাহাঙ্গীর আলমগণ শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির মৈত্রী সংঘ মাঠের পূর্ব দক্ষিণ কোণে একটি পানির পাম্পের ঠিকাদারি নিয়ে লোহার পাইপ দিয়ে আনুমানিক ৬০০ ফুট কূপ খনন করে। যাতে কোনো প্রকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করে অবহেলা ও তাচ্ছিল্য করে কূপের মুখ খোলা রেখে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। এতে অজ্ঞাতসারে পাইপের ভেতর পড়ে শিশু জিহাদের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে।
মামলার ছয় আসামি হলেন- মেসার্স এসআর হাউসের মালিক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে আবদুস সালাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের সিনিয়র সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (নলকূপ পরিদর্শন) মো. জাহাঙ্গীর আলম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদ শাকি, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দীপক কুমার ভৌমিক ও সহকারী প্রকৌশলী-২ মো. সাইফুল ইসলাম। আসামিরা সবাই জামিনে আছেন।