বিদেশের খবর: মার্কিন সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের ফলে চীন-মার্কিন সামরিক সম্পর্ক এবং তাইওয়ান প্রণালী অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে চীন। তাইওয়ানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে মার্কিন সরকারকে সরাসরি হুমকিও দিয়ে দিল দেশটি। আগুন নিয়ে না খেলতে যুক্তরাষ্ট্রেকে আহ্বান জানায় তারা।
গত শুক্রবার পেন্টাগনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চীনা কূটনীতিক ওয়াং ই বলেন, ‘আগুন নিয়ে খেলো না’। আর এবার চীনের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়ে দিল, অবিলম্বে বাতিল না করলে ওই চুক্তিতে নাম থাকা মার্কিন সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বসানো হবে। শি জিং পিং সরকারের দাবি, এই চুক্তি চীনের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ক্ষতিকর।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি তাইওয়ানের সঙ্গে ২২০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে মার্কিন সরকার। চলতি সপ্তাহের সোমবার তাতে অনুমোদন দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্র বিভাগ। পরে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চুক্তি অনুযায়ী ১০৮টি জেনারেল ডায়নামিকস কর্প এম১এ২টি আব্রামস ট্যাঙ্ক, রেথিওন সংস্থার তৈরি ২৫০টি স্টিঙ্গার ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তাইওয়ানের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
এদিকে চুক্তির ফলে সামরিক শক্তির ভারসাম্য কোনোভাবেই বিঘ্নিত হবে না বলে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু মনে ধরেনি বেইজিংয়ের।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেং শুয়াং জানান, তাইওয়ানের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি করে আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রাথমিক নিয়মকানুন লঙ্ঘন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭২ সালে শাংহাই কমিউনিকে তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে মেনে নিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তি সেই আমেরিকার সেই অবস্থানেরও পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন জেং শুয়াং। তিনি বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় তাইওয়ানের সঙ্গে অস্ত্রচুক্তিতে জড়িত মার্কিন সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বসাতে বাধ্য হব আমরা।’
আমেরিকাকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পক্ষ থেকে এখনও কোনো ধরনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি তাইওয়ানের পক্ষ থেকেও।
মার্কিন সংস্থাগুলোর উপর চীন নিষেধাজ্ঞা বসালে, তাতে দুই দেশের সম্পর্কে কতটা প্রভাব পড়বে তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরাও। কারণ ১৯৮৯ সালে তিয়ানানমেন স্কোয়ারে গণহত্যাকাণ্ডের পর থেকেই বেইজিংয়ের সঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার।