নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরার আশাশুনির চিহ্নিত সন্ত্রাসী, নারীলোভী, বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী রাজাকারপুত্র চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের কু-কর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন আশাশুনি উপজেলার সুভদ্রাকাটি গ্রামের আলহাজ্ব শওকত আলীর পুত্র ১০ নং প্রতাপনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ সোহরাব হোসেন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে তিনি, স্বাধীনতা বিরোধী আমিনুর রহমান (সুন্ত মোল্লা) এর পুত্র জাকির একসময়ের তুখড় বিএনপি নেতা ছিলো। তার পিতা ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারের দোসর, জামায়াত ইসলামের একান্ত সহযোগী। তৎকালীন উপজেলা সভাপতি ডাঃ মোকলেছুর রহমানকে জিম্মি করে প্রতাপনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়। এরপর থেকে এলাকার সাধারণ মানুষ এবং আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে। তার কথা না মানলে মিথ্যা মামলা, খুন জখমের হুমকি এবং চাঁদাবাজি শুরু করে। একপর্যায়ে অস্ত্র এবং ক্যাডার বাহিনীর সহযোগিতায় ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ইউনিয়নের খাস জমি দখল, অসহায় মানুষের সম্পত্তি দখল, এলাকার মৎস্যঘের লুটপাট লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নামে প্রতিটি বাড়ি থেকে ৫শ টাকা করে প্রায় ১৬ হাজার পরিবারের কাছ থেকে আদায় করে আত্মসাথ করে। ৩শ পরিবারের কাছ থেকে ঘর দেওয়ার নাম করে ২০ হাজার টাকা করে আদায় করে। কিন্তু মাত্র কয়েকটি ঘর দিয়ে বাকী টাকা আত্মসাথ করে।
বর্তমানে দুটি আগ্নেয় অস্ত্র, দুটি প্রাইভেটকার (যার আনুমানিক মূল্য ৫০লক্ষ টাকা), দুটি মটরসাইকেল (যার আনুমানিক মূল্য ৩লক্ষ টাকা। তাছাড়া জাকির সরকারের নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রভাবখাটিয়ে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, চাকলা দারুস সুন্নাহ আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসা, প্রতাপনগর ফাজিল মাদ্রাসা ও প্রতাপনগর ইউনাইটেড হাইস্কুল। উক্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যে প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাত, নাকনা গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্প তৈরি করে সেখানে পূর্বে খেলার মাঠটি ভরাটের নকশা তৈরি অর্ধকোটি টাকা আত্মসাত করে। এছাড়া টিআর,কাবিখা, কর্মসূচি এবং একই প্রকল্পের একাধিক কাজ দেখিয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছে ওই চেয়ারম্যান জাকির। গ্রামে দুইতলা বিশিষ্ট বিশালবহুল এসি বাড়ি (যার আনুমানিক মূল্য ৫৫লক্ষ টাকা) সাতক্ষীরা শহরের উপরে অর্ধকোটি টাকা দিয়ে জমি ক্রয়, খুলনা সেনের বাজারে বিলাশবহুল বাড়ি, ঢাকায় ফ্লাট এবং ভারতের কোলকাতায় বাড়ি করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। যার একসময়ে কিছুই ছিলো না। সে ছিলো ফরেস্ট অফিসের বোডম্যান ছিলো। অথচ মাত্র কয়েক বছরেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন জাকির হোসেন। এছাড়া অনেক অর্থ সম্পদ তার স্ত্রী আনজুয়ারা এবং ৩ কন্যা যথাক্রমে জাকিয়া সুলতানা, জেসিয়া, জেবুননেসার নামে দিয়ে রেখেছেন। যাতে করে দুদক বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ এড়াতে পারেন। এদিকে তার অত্যাচারে ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের ত্যাগী কর্মীরাও আজ অতীষ্ট হয়ে উঠেছেন। অনেক কর্মীরাই আওয়ামীলীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ওই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ জাকির হোসেনের কারণে আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিশেষ করে ইউনিয়ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিন্দু জনগোষ্ঠীকেও ব্যাপক নির্যাতন করে। অনেক হিন্দু ব্যক্তিবর্গ তার অত্যাচারে সহায় সম্বল, সম্পত্তি ফেলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া তার কারণে এলাকার সুন্দরী নারী আতংকে থাকে। বিশেষ করে যাদের সুন্দরী স্ত্রী রয়েছে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ওই স্ত্রীদের জিম্মি করে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। যা তার ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়না অনেক নির্যাতিত নারীরা। জাকিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলেও দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তিনি ওই অনুপ্রবেশকারী রাজাকারপুত্র জাকিরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাধারণ, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।