নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ যতবড় নেতা বা জনপ্রতিনিধি হোক না কেন সরকারি ঘর দেওয়ার নাম করে যমুনা পাড়ে বসবাসকারি ভূমিহীনদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করলে তাদেরকে ছাড়া হবে না। সরকার কোন আশ্রায়হীন বা ভূমিহীন, অসহায় মানুষের নিকট হতে ঘরের বিনিময় টাকা গ্রহণ করে না। এমন কাজে যাদেরকে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের খুঁজে পাওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
শুক্রবার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দুদলী গ্রামের নতুনহাটে ভূমিহীন রহিমা খাতুনকে মারপিটের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যমুনা নদী খনন বা ভূমিহীনদের উচ্ছেদ এর ব্যাপারে কোন তথ্য তার জানা নাই। যদি যমুনা খাল খনন হয় তবে আশ্রয়হীন ভূমিহীনদের প্রথমে পুর্নবাসন করে তার পর তালিকা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোন ভূমিহীনের নিকট কেউ অর্থ বা চাঁদা দাবি করে তা হলে বিষয়টি প্রথমে উপজেলা প্রশাসনকে জানাতে হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সিফাতউল্লাহ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুসেন প্রমুখ। পরিদর্শনকালে চর-যমুনা পাড়ের শত শত ভূমিহীন নারী, পুরুষ ও শিশুদের উদ্দেশ্য উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন ঘর নির্মাণের জন্য কাউকে টাকা, আইডি কার্ড বা ছবি দিবেন না। যদি কোন ব্যাক্তি ঘর নির্মাণের অর্থ বা চাঁদা দাবি করে সাথে সাথে তার অফিসে যেয়ে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এসময় ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধা মোশারাফ হোসেন, মুনছুর আলী, রফিকুল ইসলামসহ শতাধিক নারী-পুরুষ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে বলেন ঘর দেওয়ার নাম করে উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, তার ছেলে অনীক মেহেদী ও তার সন্ত্রাসি বাহিনীর সদস্য আরিফুল ইসলাম আটুল, রায়হান এসে প্রতিনিয়ত ঘরের জন্য ছবি আইডি কার্ড সহ টাকা দাবি করে। বিষয়টি নিয়ে রহিমা খাতুন বুধবার বিকালে প্রতিবাদ করায় উপজেলা চেয়ারম্যান নিজে এবং তার ক্যাডার বাহিনী ভূমিহীন রহিমাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। বেগতিক বুঝে উপজেলা চেয়ারম্যানের পরামর্শ মত মুসা এবং মোস্তফা নিজেদের শরীর ব্লেড দিয়ে কেঁটে হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে উল্টো ভূমিহীনদের নামে বৃহষ্পতিবার চাঁদাবাজীর অভিযোগ করেছে। রহিমার উপর হামলার ঘটনায় ভূমিহীনরা বৃহষ্পতিবার কালিগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
এ প্রসঙ্গে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুসেন ভূমিহীনদের উদ্দেশ্য বলেন দু’পক্ষের দুটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার আগে ভূমিহীনদের শান্ত থাকার আহবান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন জমি বা ঘর দেওয়ার নামে কাউকে টাকা দিবেন না।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শুক্রবার বিকেল চারটায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কালিগঞ্জ সার্কেলের অফিসে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ভূমিহীনদের মধ্যে বৈঠক চলছিল।