কে এম রেজাউল করিম দেবহাটা ব্যুরো : দেবহাটার পারুলিয়াতে আর.এম ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে খুলে সেখানে বেকারদের উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে এটি ফাঁদ পাতে প্রতারক চক্র। বিষয়টি স্থানীয় জনসাধারণের তৎপরতায় এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সাময়িকভাবে পন্ড হয়েছে আদায় করা অর্থ বাণিজ্য। এতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা পালিয়ে গেলেও অপরজনকে পুলিশ দীর্ঘ প্রায় ৩ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুক্ত করে দিয়েছে।
ঘটনাসূত্রে জানা গেছে, পারুলিয়া-বদরতলা মোড় নামক এলাকায় একটি ভবনের ৩টি রুম তিনমাসের জন্য ভাড়া নিয়ে সেখানে সাইনবোর্ড তুলে বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট ছাপিয়ে চাকুরীরর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিভিন্ন প্রত্যান্ত এলাকার সহজ সরল যুবকদের পুঁজি করে অর্থ আদায়ের ফাঁদ পাতে প্রতারকরা। এতে ফিল্ড অফিসার, মার্কেটিং অফিসার পদে ১৮ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হবে বলে ডেকে নিয়ে ৫০হাজার টাকা জামানত শর্তে অসংখ্য যুবকদের চাকুরী নিশ্চয়তা প্রদান করে। তবে এ চক্রের মূলহোতা খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার আব্দুল বারির ছেলে আব্দুর রহমান পরিচালক এবং তার সহযোগী অপর প্রতারক প্রতিষ্ঠানের প্রোজেক্ট ম্যানেজার পরিচয় দানকারী বাদেকাড়া পাড়া এলাকার মৃত ইব্রাহিম শেখের ছেলে আজগর আলী, দেবহাটার ঢালীরঘের এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে রফিকুল ইসলাম মিলে এ কারবার শুরু করে। রবিবার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত চাকুরী প্রার্থীদের হাজির হতে বলা হয় অফিসে। সেখানে যথা সময়ে অনেকে ভালো চাকুরীরর আশায় উপস্থিত হয়। চাকুরীর আবেদন করার জন্য তাদের কাছ থেকে কোম্পানির ১০০টাকা মূল্যে ফর্ম পুরণ করে জমা দিতে হয়। এরপর তাদেরকে জামানত স্বরূপ ব্যক্তি বিশেষ ৩০-৫০ হাজার টাকার দাবি করে ঐ প্রতারকরা। টাকা দিলে মাসে মাসে ১৮ হাজার টাকার বেতনের নিশ্চয়তাও প্রদান করা হয়। আর চাকুরীর বেতনের পাশাপাশি একটি ইজিবাইক/মোটরসাইকেল বিক্রয় করতে পারলে ৫০০ টাকা কমিশন দেওয়া হবে তাদেরকে। ফিল্ড পর্যয়ের কর্মীদের প্রধান কাজ ইজিবাইক/মোটরসাইকেল সেল্স করা। কিন্তু কোম্পানির নেই শো-রুম, নেই কোন ইজিবাইক/মোটরসাইকেল। এমনকি ঢাকা কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানের একটি ট্রেড লাইসেন্স-ই তাদের সম্বল। এসব বিষয় জানতে পেরে স্থানীয়দের মনে সন্দেহ হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়রা দেবহাটা থানা পুলিশকে অবহিত করে। দেবহাটা থানার এসআই আবু হানিফ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতে নাতে প্রতারক চক্রের সদস্য আজগর আলী ও রফিকুল ইসলামকে আটক করে। এর আগে সুকৌঁশলে কোম্পানির কাগজপত্র আনার নাম করে মূলহোতা আব্দুর রহমান পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অফিস তালাবদ্ধ করে ঘরের মালিকের নিকট চাবি হস্তান্তর করে। তবে, আরো জানাগেছে ঐ প্রতারক চক্রের সদস্যরা ডলার, ম্যাগনেট পিলারসহ বিভিন্ন প্রতারণার সাথে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই এই প্রতারকদের আইনের আওতায় এনে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে এসআই আবু হানিফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার পর তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও ব্যবসার কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। বৈধ কাগজপত্র নিয়ে থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে রুম তালাবদ্ধ করে চলে আসি। দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।