ন্যাশনাল ডেস্ক: সারা দেশে এক হাজার ৩৭৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নতুন করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে সরকার। উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশের পর তাদের নাম গেজেটভুক্তির সুপারিশ করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। তাদের সুপারিশের আলোকে গেজেটভুক্তি করতে প্রথম দফায় এক হাজার ২৭১ জন মুক্তিযোদ্ধার বিস্তারিত তথ্য চেয়ে জামুকায় চিঠি দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে জামুকার পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. সলিমুল্লাহ বুধবার যুগান্তরকে বলেন, জামুকার সুপারিশপ্রাপ্ত এক হাজার ৩৭৯ জনের মধ্যে এক হাজার ২৭১ জনের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত চেয়েছে মন্ত্রণালয়। তাদের গেজেট জারির আগে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা হবে। বাকি ১০৮ জনের বিষয়ে আদালতে মামলা থাকায় তাদের গেজেট আপাতত হচ্ছে না। আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য
জামুকায় পৌঁছাতে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি দেয়া হয়েছে।
জামুকায় চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা ছকে জামুকার সুপারিশপ্রাপ্ত জীবিত ও মৃত উভয় ধরনের মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য চাওয়া হয়। জীবিতদের জন্য শুধু অনলাইন/সরাসরি করা আবেদনের ফটোকপি এবং সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম প্রমাণপত্র/এসএসসির সনদের ফটোকপি চাওয়া হয়েছে।
মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৭ ধরনের কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ক. অনলাইন/সরাসরি করা আবেদনের ফটোকপি খ. সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম প্রমাণপত্র/এসএসসির সনদের ফটোকপি গ. মৃত্যুর সনদপত্র ঘ. ওয়ারিশ সনদপত্র ঙ. আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি. চ. আবেদনকারীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটোকপি এবং ছ. ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে ওয়ারিশগণের প্রদত্ত ক্ষমতাপত্র।
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য ২০১৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে এক লাখ ২৩ হাজার ১৫৪ জন এবং সরাসরি ১০ হাজার ৯০০ জন আবেদন করেছিলেন জামুকায়। পরে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে সারা দেশের ৪৭০টি উপজেলা/জেলা/মহানগর কমিটি গঠন করে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই শুরু হয়। ৪৭০টি কমিটির মধ্যে ৩৮৫টি তাদের প্রতিবেদন জমা দিলেও, সদস্যদের দ্বন্দ্ব এবং আদালতে মামলা থাকায় ৮৫টি কমিটি কাজ
করতে পারেনি। উপজেলা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ফের জামুকায় অধিকতর যাচাই-বাছাই করতে প্রতি বিভাগে উপকমিটি করা হয়। এ উপকমিটির সুপারিশের আলোকে গত ১০ ডিসেম্বর প্রথম দফায় এক হাজার ৩৭৯ জনকে গেজেটভুক্ত করার সুপারিশ করে জামুকা।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৪৫১, চট্টগ্রামে ৩২৪, রাজশাহীতে ১৯৯, ময়মনসিংহে ৫৬, সিলেটে ১৭৯ ও রংপুর বিভাগে ১০৬ জন। এরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হলেও এতদিন তাদের নাম গেজেটভুক্ত হয়নি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা চূড়ান্ত না হলেও এ মুহূর্তে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দুই লাখ ৩১ হাজার ৩৮৫। এর মধ্যে ভাতা পাচ্ছেন এক লাখ ৮৭ হাজার ২৯৩ জন।