দেবহাটা ব্যুরো : দেবহাটা আন্দুলপোতা সঃ প্রাথঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কন্যা শিমুলবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণী পড়–য়া ১৩ বছর বয়সী ছাত্রী আপহরনের ঘটনার ৫১দিন অতিবাহিত হলেও উদ্ধার হয়নি ভিক্টিম। সন্ধানে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে কন্যাহারা অসহায় ভিক্টিমের পরিবার। অপহরন হওয়া কন্যার মা নতুন করে মামলা করলেও এখনও বহাল তবিয়তে প্রধান সহযোগিসহ অন্যান্যরা। এ ঘটনার ভিক্টিমের পরিবার মামলা করতে গেলে মামলা রেকর্ড হওয়ার সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির বাধার মুখে প্রধান সহযোগী ছেলের মা দেবহাটা উপজেলার চর বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া খাতুন বাদ পড়ে যায়। এছাড়া অপর সহযোগী একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসিমা খাতুনও রেহাই পেয়ে যায় মামলা থেকে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ উঠলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন বাহির হয়। পরের দিন সোমবার তাদেরকে আর বিদ্যালয় আসতে দেখা যায়নি। আর এ থেকে দুই শিক্ষককের জড়িত থাকার বিষয়টি পরিষ্কার বলে জানিয়েছে ভিক্টিমের পরিবার। তবে এই দুই শিক্ষকের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার ঘটনাটি দেবহাটা শিক্ষা কর্মকর্তা কিছু জানেননা বলে জানিয়েছেন। তাই এই শিক্ষকদ্বয়ের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেইনি সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষ। উল্লেখ্য, দেবহাটা আন্দুলপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী গ্রামের স্বপন কুমার মিস্ত্রীর ৭ম শ্রেণী পড়–য়া কন্যাকে দক্ষিণ ফিংড়ী গ্রামের ওহিদুল শেখের পুত্র রায়হান শেখ বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে উত্তাক্ত করার জের ধরে ০১/১২/১৯ তারিখ সন্ধা ৬টার দিকে ভিক্টিম বাড়ির সামনে দিয়ে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় প্রধান অপহরণকারী রায়হান শেখ তার সহযোগীদের সহযোগীতায় অপহরণ করে। পর দিন ২/১২/১৯ তাং দুপুরে ভিক্টিমকে পারুলিয়া কদবেলতলা মোড় থেকে উদ্ধার করে ভিক্টিমের পরিবার। তবে সে সময় অপহরণকারীরা সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে গিয়েছিল। এঘটনায় ঐদিনই ভিক্টিমের পিতা স্বপন কুমার মিস্ত্রী বাদী হয়ে ৭/৩০ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধারায় ঘটনা উল্লেখ করে অপহরণকারী রায়হান শেখকে প্রধান আসামী করে তার সহযোগী দুর সম্পর্কের আতœীয় সদর উপজেলার শিমুলবাড়ীয়া গ্রামের জালাল ঢালীকে ২নং আসামী ও প্রধান আসামীর পিতা ওহিদুল শেখকে ৩নং আসামী করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৪। এদিকে ভিক্টিম উদ্ধার হওয়ার ৫দিন পরে ৭/১২/১৯ তাং স্কুল থেকে বাড়িতে ফেরার পথে উক্ত আসামীরা পরিকল্পিত ভাবে দুপুর ১টার দিকে শিমুলবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে প্রধান আসামীর মাতা দেবহাটা উপজেলার চর বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া খাতুন ও অপর সহযোগী একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ভিক্টিম পরিবারের অর্থযোগান দাতা নাসিমা খাতুন সহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের সহযোগীতায় আবারো অপহরণ করে প্রথমে চর বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়ে যায়। সেখান থেকে প্রধান আসামী সহ অন্যান্য আসামীরা অন্যত্র নিয়ে যায়।পরে ঐ ঘটনায় ভিক্টিমের মা অর্পনা রানী মিস্ত্রী সাতক্ষীরা বিজ্ঞ মানব পাচার অপরাধ ট্রাইবুনালে একটি পিটিশন দাখিল করে। যে পিটিশনে পুর্বের তিন জন আসামী বহালসহ নতুন করে প্রধান আসামীর মা চর বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া খাতুন এবং দেবহাটা থানার চর বালিথা গ্রামের রজব আলি সানার পুত্র রেজাউল ইসলাম ওরফে খোকনসহ ০৫জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামী করা হয়। যার পিটিশন নং-৩৯/২০২,ধারা-৬/৭/৮ মানব পাচার অপরাধ দমন আইন ২০১২। তবে এ ঘটনার আসামীরা এখনও বহাল তবিয়তে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছো। এদিকে কন্যাহারা অসহায় ভিক্টিমের পরিবার তাদের একমাত্র মেয়ের সন্ধানে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।তাই মেয়ে উদ্ধারসহ আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকা বাসী ও তার পরিবার।
পূর্ববর্তী পোস্ট