বিদেশের খবর: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া সংঘাত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আরও সহিংস হয়েছে। গত দুই দিনে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ৭০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন দেড়শতাধিক মানুষ। ভজনপুর, চান্দবাগ, কারায়াল নগরসহ বিভিন্ন এলাকায় লাঠি ও রড হাতে রাস্তায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র ব্যক্তিরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দোকানপাট ও যানবাহন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের দাবি, মাঠপর্যায়ে পর্যাপ্ত পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
বিতর্কিত সিএএ আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির শাহিনবাগে অবস্থান নিয়ে টানা দুই মাস ধরে বিক্ষোভ করে আসছেন নারীরা। ওই অবস্থানের কারণে বন্ধ হওয়া সড়ক কর্তৃপক্ষ খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার পর গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে জাফরাবাদ মেট্রোস্টেশনে একই ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জবাবে পরদিন (রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় প্রায় এক কিলোমিটার দূরের মৌজপুর চকে সিএএ সমর্থকদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। ওই দিন বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পরস্পরের দিকে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
সোমবার ওই সহিংসতা আরও জোরালো হয়ে উঠলে এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত চার জন নিহত হয়। মঙ্গলবার সকালে আবারও সহিংসতা শুরু হয়। ভজনপুর এলাকায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে পরস্পরের দিকে তেড়ে যায়। পুলিশি উপস্থিতির অবহেলা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে। চান্দবাগ এলাকায় পর্যাপ্ত সদস্য না থাকায় সহিংসতা ঠেকাতে এগিয়ে যায়নি পুলিশ।
মঙ্গলবার নতুন করে সহিংসতা হয়েছে কারায়াল নগর, মৌজপুর, ভজনপুর, বিজয় পার্ক ও যমুনা বিহার এলাকায়। এসব এলাকা থেকে প্রচুর আগুন লাগার খবর পেলেও সাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর কোনও উসকানিমূলক বক্তব্য না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দিল্লির সঙ্গে উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা রাজ্যের সীমান্ত পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।