নিজস্ব প্রতিনিধি: বিয়ের ফাঁদে ফেলে নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ভিডিও চিত্র বিভিন্ন মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় বাড়িতে তালা মেরে বৃহষ্পতিবার রাতে পালিয়েছে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন ছোট কাশীপুর গ্রামের এক পরিবার। নিরুপায় হয়ে ওই স্কুল ছাত্রী শুক্রবার রাত থেকে স্ত্রীর দাবিতে ওাই বাড়িতে অবস্থান করছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে কোন পক্ষই থানায় কোন অভিযোগ না করায় বিপাকে পড়েছে পাটকেলঘাটা থানার পুলিশ।
সরেজমিনে রোববার সকালে ছোট কাশীপুর গ্রামে গেলে মৃত্যুঞ্জয় দাসের বাড়িতে অবস্থানকারি খুলনা জেলা শহরের সোনাডাঙা এলাকার একটি কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী শ্যামলী দাস(১৬) জানায়, তাদের গ্রামের মিঠুন দাস(২৫) পাটকেলঘাটা বাজারে একটি হার্ডওয়ার দোকানের কর্মচারি। দেড় বছর আগে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্থানীয় রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ঠাকুরকে সাক্ষী রেখে মিঠুন তার কপালে সিঁদুর পরিয়ে দিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়। বিষয়টি মিঠুন তার কাকাতো বোন টুম্পাকে বলে তাদের বাড়িতেই শারীরিক সম্পর্ক করতো। খুলনার ছাত্রীনিবাসে গেলে মোবাইলে তাদের কথা হতো। করোনার কারণে তিন মাস আগে সে বাড়ি আসে। এরপরও বিভিন্ন স্থানে তাদের শারীরিক সম্পর্ক চলতো। সম্প্রতি সে মিঠুনকে স্ত্রী হিসেবে বাড়িতে তোলার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। এতে মিঠুন তাদের অন্তঃরঙ্গ ভিডিও চিত্র সে নিজে ও বন্ধুদের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে সে বিষয়টি বাবা ও মাকে অবহিত করে। বিষয়টি বাবা মিঠুনের বাবা ও মাকে জানায়।
অনিল দাস জানান, শ্যামলীকে পুত্রবধু হিসেবে মেনে নিতে রাজী না হওয়ায় তারা বিষয়টি স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে গত ২২ আগষ্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় রাধাগোবিন্দ মন্দিরে মিঠুনের পরিবারকে ডাকেন এলাকাবাসী। মেয়ে ইউএনডিপি’র কর্মচারি চম্পা দাস বাড়িতে না থাকায় তারা এক সপ্তাহের সময় চান। ২৪ আগষ্ট তাদের (অনিল) বাড়িতে ও আর এক দফা বসাবাসি হয়। মিঠুনের পরিবার বিষয়টি মেনে নিতে রাজী না হওয়ায় ২৬ আগষ্ট বুধবার সন্ধ্যায় শ্যামলী নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এর মধ্যে শ্যামলী গত ২২ আগষ্ট এপেনডিসাইটিস অপারেশন হয় পাটকেলঘাটা লোকনাথ ক্লিনিকে। ২৬ আগষ্ট তার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ২৭ আগষ্ট বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে তালা লাগিয়ে মিঠুন দাস, তার বাবা মৃত্যুঞ্জয় দাসসহ পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র চলে যায়। ফলে ২৮ আগষ্টের শালিসি বৈঠক না হওয়ায় রাত ৯টার দিকে শ্যামলী স্ত্রীর দাবিতে মিঠুনদের বাড়ির বারান্দায় অবস্থান করছে। বিষয়টি ট্রিপল নাইনে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে।
তবে ছোট কাশীপুর দাসপাড়ার বিশ্বজিৎ দাস, সঞ্জয় দাসসহ কয়েকজন জানান, মিঠুন স্ত্রী হিসেবে শ্যামলীকে মেনে নিতে চাইলেও আপত্তি করছে তার বোন চম্পা ও বাবা মৃত্যুঞ্জয়। ফলে পরিস্থিতি পরপর জটিল হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিঠুন দাসের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার বোন চম্পা দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নম্বরটি সঠিক নয় বলে দাবি করেন।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোঃ জেল্লাল হোসেন বলেন, ট্রিপল নাইনে ফোন করায় উপরিদর্শক প্রদ্যুৎকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলেন। তবে কোন লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। স্থানীয় একটি মহল ভিকটিম পরিবারকে থানায় আসতে বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
৩০.০৮.২০২০