অসম্ভবকে সম্ভব করার স্বপ্নই দেখছিলেন অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ কোচ ডিয়েগো সিমিওনে। প্রথম লেগের পরই ঘুরে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু তার সেই স্বপ্নকে অবাস্তবই ঠেকছিল শুরুতে। কারণ দলটা যে রিয়াল মাদ্রিদ। এই মৌসুমে কোনও ম্যাচে এক গোল ব্যবধানের বেশিতে হারেনি তারা। আর সেই দলকেই চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ২-১ গোলে হারিয়েছে অ্যাতলেতিকো। কিন্তু প্রথম লেগে ৩ গোলে এগিয়ে থাকায় দুই লেগে ৪-২ অ্যাগ্রিগেটে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
ভিসেন্তে ক্যালদেরনে শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিল অ্যাতলেতিকো। যদিও বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল রিয়াল। আর খেলার দ্বিতীয় মিনিটেই আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন অ্যাতলেতিকোর ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড আঁতোয়া গ্রিজমান। ৩০ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের শট নিলেও তা লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। বল চলে যায় বারের উপর দিয়ে।
তবে ১২ মিনিটে আর ব্যর্থ হয়নি তার দল। গোল করেন সাউল নিগুয়েস। কর্নার থেকে কোকের উঠিয়ে দেওয়া ডেলিভারিতে লাফিয়ে ওঠে বুলেট গতির হেডে গোল করেন এই মিডফিল্ডার। রিয়াল গোলরক্ষক নাভাস বলে হাত ছুঁয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু গতিতে আর পেরে উঠেননি।
এর চার মিনিট পর আবারও গোলের দেখা পায় অ্যাতলেতিকো। পেনাল্টির সুবাদে স্কোর ২-০ করেন আঁতোয়া গ্রিজমান। ডি বক্সে তরেসকে ফেলে দেন ভারানে। আর তাতেই পেনাল্টি পায় অ্যাতলেতিকো।
শুরুর দিকে পিছিয়ে পড়াতে হাতাশাই গ্রাস করে রিয়ালকে। রিয়াল তারকা রোনালদোর চোখে মুখেই ফুটে উঠছিল সেসব। পেনাল্টির পর চোখ বন্ধই করে ফেলেছিলেন আগের লেগে হ্যাটট্রিক করা এই তারকা। তবে ৪২ মিনিটে আর হতাশায় থাকতে হয়নি দলটিকে। ঠিকই গোল শোধ করে রিয়াল মাদ্রিদ। শুরুতে অবশ্য বেনজেমাই বাঁ পাশের জটলা কাটিয়ে এগিয়ে নেন বলকে। এরপর ক্রুসকে বল দিয়েছিলেন, দুর্দান্তভাবে তার করা সেই ক্রস অবশ্য প্রথম দফায় ঠেকিয়ে দেন অ্যাতলেতিকো গোলরক্ষক ওবলাক। কিন্তু ফিরতি বলটাই কাছ থেকে জালে জড়িয়ে দেন ইসকো।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে ভরপুর হয়ে ওঠে খেলা। যদিও স্কোরের আর হের ফের হয়নি। তবে ৬৯ মিনিটে জালে বল জড়িয়েছিল রিয়াল। কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে সেটি বাতিল হয়। এর আগে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করে অ্যাতলেতিকো। তবে তাতে বাধা হয়েছিলেন রিয়াল গোলরক্ষক নাভাস। দুর্দান্তভাবে সেভ করে বাঁচিয়েছেন দলকে। তাই শেষ পর্যন্ত আর কোনও বিপদে পড়তে হয়নি রিয়ালকে। হার নিয়ে মাঠ ছাড়লেও ফাইনালে পৌঁছাতে পেরে নিজেদের মান রেখেছে জায়ান্টরা! কারণ এই ম্যাচ জিতে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের কাছে চলে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ জুভেন্টাস।