এম বেলাল হোসাইন: পাটকেলঘাটার শাকদহা ব্রিজ সংলগ্ন সরুলিয়া থেকে তেরছি – শালিখা হয়ে দলুয়া নদী পর্যন্ত খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খালটি সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক খনন না করে তড়িঘড়ি করে এ কাজ করা হচ্ছে। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদার গোপন আতাতের মাধ্যমে এ কাজ করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থায়ী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে বর্তমান সরকার টেন্ডারের মাধ্যমে উক্ত খালটি খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সে মোতাবেক ৯.৪০০ কিলোমিটার খাল খননের জন্য ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কাজটির ঠিকাদার শামীমুর রহমান খালটি খনন কার্যক্রম শুরু করেছেন। কিন্তু খাল খনন করতে হলে অবশ্যই একটি সাইনবোর্ড দিতে হবে। যেখানে খালটি গভীরতা কতটুকু, নীচে ও উপরের চওড়া কত টুকুসহ খাল খননের বিস্তারিত লেখা থাকবে। অথচ ঠিকাদার সে বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ না করে খালটি গভীর না করে খালের মাটি টেনে নিয়ে দু’ ধারে প্রলেপ দিয়ে দিচ্ছেন। খালের ভিতরে গভীর না করে নেল মাটি টেনে দুই পাশের ভেড়ি দেওয়া হচ্ছে। এতে করে পাশের বিলগুলোর পানি নিষ্কাশিত হবে না। ফলে উক্ত বিলগুলোতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এছাড়া খালের কিছু কিছু স্থানে এবং শাকদহা ব্রিজের নিচে স্ক্যাবেটরের কোন স্পর্শও লাগেনি।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে শাকদহা এলাকায় খাল খননে পুকুর চুরির ভয়াবহ চিত্র চোখে পড়ে। সেখানে উপস্থিত সাব কন্ট্রাকটার দেলওয়ার হোসেন দুলাল এর সাথে খাল খননের বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, তাদের শুধু মাত্র খালের দু’ধার উচুঁ করা, খালের মধ্যে থেকে নেল মাটি তুলে প্রলেপ দেওয়ার কথা রয়েছে। খালের ভিতরের গভীরতার বিষয়ে তাকে জানানো হয়নি বলে জানান। এসময় তার কাছে কাজের সিডিউল দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেন নি।
খালের গভীরতা না বাড়িয়ে এভাবে প্রলেপ দেওয়ায় হতাশ হয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী মনে করছেন এভাবে খাল কাটলে তাতে আমাদের কোন উপকার হবে না বরং বর্ষা আসলেই দু ধারের মাটি পড়ে খালটি পুনরায় ভরাট হয়ে যাবে। এর ফলে পুনরায় জলাবদ্ধতা শুরু হবে।
এ বিষয়ে তালা কলারোয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি বলেন, খাল খনন করতে হলে অবশ্যই একটি সাইনবোর্ড দিতে হবে। যেখানে খালটি গভীরতা কতটুকু, নীচে ও উপরের চওড়া কত টুক লেখা থাকবে। যাতে জনগণ খাল খনন সম্পর্কে অবগত হতে পারে। কিন্তু এখানে কোন সাইন বোর্ড বিষয়ে তিনি যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড দোষারোপ করেন।
এবিষয়ে ঠিকাদার বিপ্লব’র এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অনেক কষ্ঠ করে এলাকাবাসীর উন্নয়নে খালটি খননে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। আমরা বহু কষ্টে কাজটি করেছি। দয়া করে আর লেখালেখি করেন না।
এদিকে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, খালটি খননে কোন অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়নি। তাছাড়া খনন কাজ তো এখনো শেষ হয়নি। তবে খনন এলাকায় কেন সাইনবোর্ড দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি এখনই তাদের কে বিষয়টি জানাবো।
পূর্ববর্তী পোস্ট