বিদেশের খবর : চলমান করোনা মহামারির মধ্যেই ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মিউকরমাইকোসিস অর্থাৎ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। আর এর জেরে দেশটির গুজরাট, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা এবং রাজস্থানের পর এবার উত্তরাখণ্ড রাজ্যও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বিভিন্ন রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২০ মে এটিকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সঙ্গে এই রোগকে মহামারি আইনের অধীনে আনার জন্য রাজ্যগুলোকেও নির্দেশ দেয় মোদি সরকার।
শনিবার (২২ মে) উত্তরাখণ্ডের স্বাস্থ্যসচিব পঙ্কজ কুমার পাণ্ডে জনিয়েছেন, রাজ্যে এই রোগের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনা মেনেই ১৮৯৭ সালের মহামারি আইনের অধীনে আনা হয়েছে এই রোগকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত রাজ্যটিতে ৬৪ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ জন। পাণ্ডে বলেন, ‘করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এটা খুব উদ্বেগের বিষয়।’
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন বা কালো ছত্রাক সংক্রমণকে চিকিৎসাবিদ্যার ভাষায় বলা হচ্ছে ‘মিউকোরমাইকোসিস’। করোনায় আক্রান্তদের দেহেই এ রোগ দেখা দিচ্ছে। অনেকে করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকে মারাও যাচ্ছেন। তা ছাড়া দেহের বিভিন্ন ক্ষতি করছে এ ছত্রাক।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে রোগীর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন কমে যায়, ঠিক তখনই কালো ছত্রাক সংক্রমণ ঘটায়। এই রোগে মুহূর্তেই পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যেতে পারে। সংক্রমণ তীব্র হলে রোগী মারাও যেতে পারেন।
চিকিৎসকরা আরও বলছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হলে মৃত্যুর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু কোভিডের মতো এটি সংক্রামক নয়। সাধারণত আক্রান্তদের মধ্যে জ্বর, নাক-চোখ লাল হওয়া, দৃষ্টি কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ও রক্তবমির মতো উপসর্গগুলো দেখা যাচ্ছে।
মিউকোরমাইকোসিস বা কালো ছত্রাক সংক্রমণ কী?
এটি এক ধরনের গুরুতর ফাঙ্গাল ইনফেকশন (ছত্রাকজনিত সংক্রমণ)। দীর্ঘমেয়াদী (ক্রনিক) কোনো শারীরিক জটিলতা থেকে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়লে এই রোগের সংক্রমণ দেখা দেয় ভারতের নীতি আয়োগ সংস্থার সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পাল বলেন, মিউকর নামক একটি ছত্রাক মিউকোরমাইকোসিস সংক্রমণের জন্য দায়ী। সাধারণত আর্দ্র স্থানে এই ছত্রাক জন্মায়।