বিদেশের খবর : আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের উত্তরের পাঞ্জশির উপত্যকায় সোমবার রাতে তালেবানবিরোধী প্রধান মিলিশিয়া যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইয়ে আট তালেবান নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন মিলিশিয়া গোষ্ঠীটির এক প্রতিনিধি।
তালেবান গোটা আফগানিস্তান দখলে নিলেও কাবুল থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ি উপত্যকা পাঞ্জশিরের দখল এখনো নিতে পারেনি। পাঞ্জশির ছাড়াও পাশের বাগলান প্রদেশে তালেবানের সঙ্গে স্থানীয় মিলিশিয়াদের লড়াই চলছে।
আফগানিস্তানে এখনও পর্যন্ত পঞ্জশির একমাত্র ঘাঁটি যেখানে তালেবান যোদ্ধাদের প্রতিরোধ করা হয়েছে। শুধু এবারে তালেবান ঠেকানো নয়, গত ৪০ বছরের ইতিহাসে এই উপত্যকা বিভিন্ন সময়ে নানা বাহিনীর বহিরাক্রমণ প্রতিহত করে এসেছে।
পাঞ্জশিরে আহমেদ মাসুদের অনুগত বাহিনী ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্সেসের (এনআরএফ) মুখপাত্র ফাহিম দাশতি বলেছেন, উপত্যকার পশ্চিম প্রবেশদ্বারে এনআরএফ-এর লক্ষ্যবস্তুুতে তালেবান হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ের সূত্রপাত।
তিনি বলেন, উপত্যকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী তার পরীক্ষা নেওয়ার জন্য চালানো এই হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। তাতে আট তালেবান নিহত এবং আরও আট জন আহত হয়েছেন। হামলায় এনআরএফ বাহিনীর দুই সদস্যও আহত হয়েছেন।
এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তালেবানোর কোনো মুখপাত্রের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, তালেবান কাবুলে প্রবেশের পর এনআরএফ নেতা আহমেদ মাসুদ ‘আফগান স্বাধীনতার সবশেষ দুর্গ’ হিসেবে পাঞ্জশির রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছিলেন।
তার বাবা ‘পাঞ্জশিরের সিংহ’ হিসেবে পরিচিত আহমেদ শাহ্ মাসুদ ১৯৯০-এর দশকে তালেবান প্রতিরোধের যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন নর্দার্ন এলায়েন্সের একজন নেতা। তার ছেলে এখন ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্সেসের নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার দুদিন আগে আল-কায়েদা মুজাহিদীন গেরিলা আহমেদ শাহ মাসুদকে হত্যা করে। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে এই অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসনের যুদ্ধে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
দুই দশকের যুদ্ধ শেষে সোমবার রাতেই আফগানিস্তান ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সেনা। একই রাতে পাঞ্জশিরে তালেবান ও এনআরএফ এর মধ্যে এই লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেল। এদিকে মার্কিন সেনা চলে যাওয়ার পর কাবুল বিমানবন্দরে ঢুকেছে তালেবান।