নিজস্ব প্রতিনিধি :
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়েও দুটি মাদ্রাসার সভাপতি তিনি। অভিযোগ রয়েছে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই প্রতিষ্ঠান হতে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
এ অভিযোগ শ্যামনগর সরকারি হরিচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে।
সাতক্ষীরা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বেসরকারি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে গেলেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু আব্দুল মান্নান কোন দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়েছেন সেটি জানেন না জেলা শিক্ষা অফিসারও। তারপরও আব্দুল মান্নান দীর্ঘদিন ধরে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। যদিও কাশিমাড়ী মহিলা মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি তিনি। এডহক কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও তিনিই সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান একজন নিকট আতœীয়ের সুনজরের কারনে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়েও দুটি মাদ্রাসার সভাপতি হয়েছেন। মাদ্রাসা দুটির মধ্যে শ্যামনগরের ঐতিহ্যবাহী জয়নগর সিনিয়র মাদ্রাসা এবং কাশিমাড়ী মহিলা দাখিল মাদ্রাসা। সভাপতির পদ হাতিয়ে এ পর্যন্ত ৪ চার উপাধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে দিয়েছেন জয়নগর সিনিয়র মাদ্রাসায়। জনশ্রুতি আছে এসব নিয়োগে তিনি হাতিয়েছেন কয়েক লক্ষাধিক টাকা। প্রভাব খাটিয়ে নিজের ভাই আব্দুল হান্নানকেও অফিস সহকারী পদে চাকুরি দিয়েছেন।
এছাড়া গত ২৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখ শুক্রবার জয়নগর সিনিয়র মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য পাতানো নিয়োগ বোর্ড সম্পন্নের পায়তারাও করেন। কিন্তু অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের চেষ্টাকারী ওই শিক্ষক মাও: তয়ৈবুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির পর গায়েবানা জানাযা নামাজে ইমামতি করার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসায় সেই নিয়োগ স্থগিত করতে বাধ্য হন তিনি। এর পর বিষয়টি কিভাবে গোয়েন্দা সংস্থার কানে গেল তা নিয়েও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- কর্মচারীদের গাল মন্দ করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক -কর্মচারীরা জানিয়েছেন।
তারা আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে শ্যামনগর সরকারি হরিচরন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি কাশিমাড়ী মহিলা মাদ্রাসা এবং জয়নরগর আমিনিয়া মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এটার বৈধতা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটি কর্তৃপক্ষের কাছে শোনেন।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, একজন সরকারি স্কুলের শিক্ষক উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন না। তবে অনুমতি থাকলে পারবেন। মান্নান সাহেব অনুমতি নিয়েছেন কি আমার জানা নেই।
সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েও দুটি মাদ্রাসার সভাপতি আ: মান্নান!
পূর্ববর্তী পোস্ট