কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে দুই জন সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা নিয়েছেন চাঁদাবাজির দায়ের করা হয়েছে।
মিথ্যা মামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্পন্দন পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার কৃষ্ণনগর প্রতিনিধি সহকারী শিক্ষক আফজাল হোসেন (৩৩) এবং দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকার কৃষ্ণনগর প্রতিনিধি সহকারী শিক্ষক আব্দুল মাজেদের (৩৬) বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের রুহুল আমিন গাজীর ছেলে ফার্নিচার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম (৩৯) বাদী হয়ে রবিবার (৫ জুন) রাতে আফজাল হোসেন ও আব্দুল মাজেদসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা কাল্পনিক মামলাটি দায়ের করেছেন।
জানাযায়, সম্প্রতি কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনের বিরুদ্ধে প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে পত্রিকায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশিত হলে ওই দুই সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হন তিনি।
এরই জের ধরে রবিবার দিবাগত রাতে ইউপি চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীন থানায় নিজে উপস্থিত থেকে দু’জন প্রতিথযশা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে ভূমিকা রাখেন। মামলায় যাদের স্বাক্ষী করা হয়েছে তারা সবাই চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনে কর্মী সমর্থক ও বাদীর দোকানের কর্মচারী। আর অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে তদন্ত ছাড়াই চাঁদাবাজি ও হামলার বিষয়ে মামলা রেকর্ড করলেন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও ভারপ্রাপ্ত ওসি মিজানুর রহমান। তদন্ত ছাড়াই মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে বলে স্বীকার করে সাংবাদিকদের মুঠোফোনে ভারপ্রাপ্ত ওসি মিজানুর রহমান জানান, এখন তদন্ত করে ঘটনা সত্য হলে চার্জশীট দেয়া হবে আর মিথাা হলে ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হবে।
এদিকে দু’জন সাংবাদিক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় সোমবার বিকেল ৫ টায় রিপোর্টার্স ক্লাবের এক জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক নিয়াজ কওছার তুহিন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল আলম বাবলুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি আহাদুজ্জামান আহাদ, সাদেকুর রহমান. যুগ্ম সম্পাদক ইউপি সদস্য এসএম গোলাম ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ শাওন আহম্মেদ সোহাগ, অর্থ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক গাজী মিজানুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক এমডি আরাফাত আলী, তথ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক বাবলা আহম্মেদ, নির্বাহী সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সনৎ কুমার গাইন, সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ ক্যাপ্টেন, হাবিবুল্যাহ বাহার প্রমুখ। কোন তদন্ত না করেই একটি অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদাবাজির মামলা রেকর্ড করার ঘটনায় সাংবাদিকগণ চরম ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানোর পাশাপাশি মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাংবাদিকবৃন্দ।
এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান তার পোষা বাহিনীর এক সদস্যকে ব্যবহার করে অবৈধ পন্থায় সাংবাদিকদের দমন করতে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও ভারপ্রাপ্ত ওসি মিজানুর রহমানের সহযোগিতায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল ১১ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সকল সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে অংশগ্রহণের জন্য সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।