দুই মাস ধরে একটি খামারবাড়িতে একটি কনটেইনার বাক্সের মধ্য আটক থাকার পরে কালা ব্রাউন নামের এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারের ওই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেছে পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যালিফোর্নিয়ার এক খামারবাড়িতে ঘটেছে এ ঘটনা।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ কর্মকর্তারা নিখোঁজ দুজনকে খুঁজতে গিয়ে সন্ধান পায় ওই তরুণীর। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা একটি খামারবাড়িতে গিয়ে গোঙানির একটা আওয়াজ পায়। তবে শব্দটা এতই ক্ষীণ যে প্রথমে তারা খুব একটা গুরুত্ব দেননি। আবার গোঙানির শব্দে আসে একটি ধাতব কনটেইনার থেকে। তালা ভেঙে দেখা যায় ভেতরে অন্ধকারে বাঁধা অবস্থায় রয়েছে এক তরুণী। ঘুটঘুটে অন্ধকারে টর্চের আলোয় পড়তেই দেখান মেলে মেঝেয় পাতা মাদুরের ওপরে হাঁটু ভাঁজ করে বসে আছেন ওই তরুণী। দেয়ালের সঙ্গে তাঁর গলা শক্ত করে চেন দিয়ে বাঁধা। খুব নড়াচড়াও করতে পারছেন না। গত বছরের নভেম্বরে নর্থ ক্যারোলিনার একটি জঙ্গলের খামারবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ওই তরুণীকে। তাকে উদ্ধারের সেই ভিডিও ছেড়েছে পুলিশ।
ভিডিওতে দেখা যায়, বিশাল একটি ধাতব কনটেইনার খোলার চেষ্টায় মত্ত কয়েকজন অফিসার। শেষে তালা ভেঙে দেখা যায় ভেতরটা খুব অন্ধকার। চারিদিক ছড়িয়ে আছে নানান জিনিসপত্র। বাসি খাবার এবং কিছু বইও ছিল। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে একজন অফিসার চেঁচিয়ে বলেন, ‘এখানে, এখানে একজন তরুণী…এখানে একজন তরুণী।’ দেখা যায় চোখে চশমা, কালো শার্ট আর পায়জামা পরে মেঝেতে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছেন এক তরুণী। ওই তরুণী এতই কাহিল ছিলেন যে পুলিশ অফিসারের দিকে তাকাতেও তার কষ্টা হচ্ছিল। ক্ষীণ কণ্ঠে কি যেন বললেন। এর পর আবার মাথা নিচু করে পড়ে রইলেন। তাঁর গলায় একটা বেল্ট লাগানো ছিল। সেই বেল্টের সঙ্গেই চেন দিয়ে কনটেইনারের দেওয়ালে আটকে রাখা হয়েছিল তাঁকে। চেন কেটে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
গত বছরের আগস্ট মাসের ৩১ তারিখ থেকে ওই তরুণী নিখোঁজ ছিলেন। ওই একই সময় থেকে সন্ধান মিলছিল না চার্লস ডেভিড কারভার নামে তাঁর এক বন্ধুরও। পুলিশের কাছে ওই তরুণী জানিয়েছেন, বন্ধুর সঙ্গে কনটেইনার পরিষ্কারের কাজ নিয়ে ওই খামারবাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, খামারবাড়ির মালিক টেড কোহপ তাঁদের আটকে রাখেন। কোনো কারণ ছাড়াই কিছুদিন পর প্রথমে বন্ধু কারভারকে গুলি করে খুন করে কোহপ। এরপর ওই তরুণীকে কনটেইনারের মধ্যে ৬০ দিন আটকে রাখা হয়। কনটেইনারে কোনো জানালা ছিল না। দিনে দু’বার মুখ ঢাকা এক ব্যক্তি তালা খুলে ভেতরে ঢুকে খাবার আর পানি দিত। ওই তরুণীর সঙ্গেই কনটেইনারে আরও চারজনকে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে এক এক করে তাঁদেরও খুন করে। তাঁরও হয়তো এ রকমই পরিণতি হতো বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ওই তরুণী। তাঁদের খোঁজে সেখানে পুলিশ না গেলে হয়তো ওই তরুণীর অবস্থাও হয়তো তার বন্ধুর মতো হতো।
https://www.youtube.com/watch?v=tUcDiK_IMJQ