নিজস্ব প্রতিনিধি :
শ্রান্তি বিনোদনের জন্য কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়েছেন শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই কর্মচারি রাশেদুল ইসলাম খান ও মো. আরিফ বিল্লাহ। কতৃপক্ষের কাছে পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার অজুহাত দেখালেও তাদের দু’জনই বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।
প্রথমজন চেক জালিয়াতির মামলায় বিচারিক আদালতের সাজা মাথায় নিয়ে আত্মসমর্পন করে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে জেল খাটছেন গত রোববার থেকে। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়ে ২৭ জুলাই থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী।
অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুত্বপূর্ণ দুই কর্মচারী শ্রান্তি বিনোদনের ছুটির নামে কারাগারে আটক থাকা সত্ত্বেও নিশ্চুপ কতৃপক্ষ। বরং কারান্তরীণ হওয়ায় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে অনুপস্থিত দুই কর্মচারীর বদলী ‘ডিউটি’ করানো হচ্ছে অন্যদের দিয়ে।
জানা যায়, ২৩ জুলাই ঢাকার মিরপুরের একটি বাসা থেকে ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আরিফ বিল্লাহ। চাকরি পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া আরিফকে নিয়োগ বাণিজ্য ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় হাতেনাতে আটক করা হয়। এসময় তার মোবাইল ফোনে স¤প্রতি অনুষ্ঠিত কয়েকটি দপ্তরের প্রশ্নপত্রসহ আরও কিছু নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়াদীর প্রমান পায় অভিযান পরিচালনাকারী বাহিনী। গ্রেপ্তার হয়ে তিন দিন ডিবি হেফাজতে থাকার পর গত ২৭ জুলাই আরিফকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়। তবে আটকের পর তিন দিন পর্যন্ত হেফাজতে থাকার সময় সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথা উল্লেখ করে আদালত রিমান্ড না মঞ্জুর করে আরিফকে কারাগারে প্রেরণ করেন। শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের ইসমাইল হোসেনের ছেলে আরিফ মাত্র ১০ বছরের চাকরি জীবনে উপজেলা সদরের বাদঘাটা মৌজায় কোটি টাকার তিনটি প্লটের মালিক হয়েছেন। এছাড়া দুটি বাড়িসহ প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন নিয়োগ বানিজ্য আরও চাকুরীর প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িয়ে।
এর আগে চেক জালিয়াতি সংক্রান্ত একটি মামলায় ২৬ জুন সাতক্ষীরা অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত পুর্বের জামিন বাতিল করে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী মেডিকেল অফিসার রাশেদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে। বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে কোনভাবে কারাজীবন এড়ানোর সুযোগ না পেয়ে গত ৩০ জুলাই তিনি আত্মসমর্পন করে কারাগারে ঢুকেছেন উচ্চ আদালতে জামিন আবেদনের সুযোগ নিতে। জানা যায় শুরুতে সাজার বিষয়টি গোপন রেখে তিনি কর্মস্থলে দিব্যি দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতারণার ঘটনায় জানাজানি হলে গত ৮ জুলাই থেকে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এসময় শুরুতে ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করলেও গত ২৪ জুলাই দ্বিতীয়বার ছুটির আবেদন জমা দেন।
এসব বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান জানান ছুটির আবেদন করে উভয়ে অনুপস্থিত। তারা কারাগারে রয়েছে কিংবা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন এসব তথ্য জানিয়ে বিজ্ঞ আদালতের কোন নির্দেশনাও পায়নি। তবে আপনাদের মাধ্যমে অবগত হয়ে ইতোমধ্যে সিভিল সার্জন স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি।