রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিকতা এবং শান্তির অনন্য নজির স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করার প্রস্তাব করেছেন বিশ্বের খ্যাতিমান চিন্তাবিদ এবং শিক্ষাবিদরা। প্রতি বছর অক্টোবর মাসে শান্তিতে অবদানের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা হয়। ১০ ডিসেম্বর নরওয়ের অসলোতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার প্রদান করা হয়। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয় ‘অক্সফোর্ড নেটওয়ার্ক অব পিস স্টাডিজ’, সংক্ষেপে এটাকে বলা হয় অক্সপিস।
অক্সপিসের দুজন শিক্ষাবিদ ড. লিজ কারমাইকেল এবং ড. অ্যান্ড্রু গোসলার মনে করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন, তা সারা বিশ্বের জন্য এক অনুকরণীয় বার্তা। তাদের মতে, ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো যখন শরণার্থী নিয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত, তখন বাংলাদেশ দেখাল কীভাবে এই সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। তারা দুজনই শেখ হাসিনাকে ‘মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস স্টাডিজ বিভাগের তিন অধ্যাপক যৌথভাবে শেখ হাসিনাকে বিশ্ব শান্তি দূত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ড. অলডো সিভিকো, ড. দীপালী মুখোপাধ্যায় এবং ড. জুডিথ ম্যাটলফ যৌথভাবে বলেছেন, ‘নোবেল শান্তিজয়ী অংসান সু চি আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যক্রম পাশাপাশি মূল্যায়ন করলেই বোঝা যায় বিশ্ব শান্তি নেতা কে।’
তাদের মতে, ‘সুচি মানবতার চরম সীমা লঙ্ঘনকারী বার্মার সামরিক জান্তাদের রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো পৈশাচিকতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার চরম ঝুঁকি নিয়েও তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন।’ তারা মনে করেন, ‘শেখ হাসিনা শান্তি নতুন বার্তা দিয়েছেন গোটা বিশ্বকে।’
হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাভার্ড ডিভাইনিটি স্কুলের ডিন ডেভিড এন হেম্পটন মনে করেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তির নতুন মাত্রা দিয়েছে। কেবল শান্তির স্বার্থে দেশটি চরম অর্থনৈতিক ঝুঁকি নিয়েছে।’ তার মতে, ‘এতোগুলো শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য মানবিক হৃদয় লাগে। জার্মানি যা করতে পারেনি, শেখ হাসিনা তা করে দেখিয়েছেন।’
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইন ক্যানবেরার অধীনে পরিচালিত ‘পিস অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট‘। এই ইন্সটিটিউটের প্রধান ড. হেনরিক উরডাল মনে করেন, ‘বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকেই বিশ্ব শান্তির নেতার মর্যাদা দেয়া উচিত। সত্যিকার অর্থেই যদি শান্তিতে অবদানের জন্য কোনো পুরস্কার থাকে তাহলে সে পুরস্কার পাবার একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি হলেন শেখ হাসিনা।’ রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে গেলো এক সপ্তাহে স্ব স্ব দেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনার এবং সভায় তারা এই সব মন্তব্য করেছেন। প্রত্যেকে নোবেল শান্তিতে পুরস্কার মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখেন।