প্রধান বিচারপতির দেশত্যাগের ঘটনায় ১৪ অক্টোবর প্রকাশিত প্রথম আলো-ডেইলি স্টারসহ আরও কয়েকটি দৈনিক পত্রিকার ভুয়া খবরের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে ভাইরাল হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার প্রথম আলো-ডেইলি স্টারসহ দৈনিকগুলোর পক্ষ থেকে এ ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে পাঠকদের সতর্ক করা হয়েছে।
ভুয়া খবরের স্ক্রিনশটের যেসব চ্যানেল আই অনলাইনের হাতে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে পত্রিকাগুলোর লে আউট বা বাহ্যিক অবকাঠামো ঠিক রেখে তাতে ইচ্ছে মতো সংবাদ এবং সংবাদ শিরোনাম এডিট করে পরিবেশন করা হয়েছে। দেখলে মনে হবে যেন প্রকাশিত পত্রিকাতেই এমন খবর ছাপা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রথম আলো অনলাইনে দেয়া এক ব্যাখ্যায় লিখেছে: প্রথম আলোর ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর তারিখের ছাপা পত্রিকার প্রথম পাতার অনুরূপ একটি ভুয়া পাতার স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, ‘সরকারের চাপের মুখে প্রধান বিচারপতির দেশত্যাগ’ ও ‘প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে বাধ্য করার হুমকি!’ শিরোনামে দুটি খবর আছে।
এর পাশে ‘ক্ষমতা দেখাল সরকার’ শিরোনামে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের নামে একটি লেখা আছে। বাস্তবে প্রথম আলোর প্রথম পাতায় এ ধরনের কোনো খবর বা ছবি প্রকাশিত হয়নি, এটা একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বলে জানায় প্রথম আলো।
একই ঘটনায় পাঠককে বিভ্রান্তিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডেইলি স্টার লিখেছে, ১৪ অক্টোবর প্রকাশিত পত্রিকায় ‘অ্যা ডিসগ্রেস টু বাংলাদেশ’ শিরোনামে সম্পাদক মাহফুজ আনামের কোন লেখা প্রকাশিত হয়নি। এমনকি ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটের ‘এজ ইফ আর হেডিং টু জাংগল ল’ শিরোনামের কোন লেখাও প্রকাশিত হয়নি।
ডেইলি স্টারের অনলাইনে বলা হয়েছে: ধারণা করা হচ্ছে, এটি ওয়াহিদুজ্জামান নামের বহিষ্কৃত এক শিক্ষকের ফেসবুক একাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে।
‘বাস্তবতা হচ্ছে, মাহফুজ আনাম সম্প্রতি সময়ে কোন কলাম লিখেননি। ডেইলি স্টার মনে করে, পত্রিকার সুনামকে ক্ষুণ্ন করার জন্য এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই কাজ করা হয়েছে।’
শুধু প্রথম আলো-ডেইলি স্টার নয়, সমকাল, ইত্তেফাকসহ বহুল প্রচারিত পত্রিকাগুলোর ১৪ অক্টোবর তারিখের প্রথম পাতার লে-আউট ঠিক রেখে ভুয়া পাতার স্ক্রিনশট তৈরি করা হয়েছে। সমকাল তার পাঠককে সতর্ক করে লিখেছে, ১৪ অক্টোবর দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার একটি ভুয়া ইমেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
‘সমকালের মাস্টহেডের স্ক্রিনশট নিয়ে ফেসবুকে ভুয়া প্রথম পেইজ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রধান বিচারপতি ও সরকার নিয়ে মনগড়া মিথ্যা তথ্য সম্বলিত গুজব ছড়ানো হয়। প্রতিটি খবরের শিরোনাম ছিল মনগড়া।’
সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়ার নামে একটি পেজ থেকে ওই ভুয়া স্ক্রিনশটে ভুয়া খবর প্রচার করা হয়।
দৈনিক ইত্তেফাকের ১৪ অক্টোবর তারিখের প্রথম পাতার ভুয়া স্ক্রিনশটও ছড়ানো হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। যে স্ক্রিনশটটি চ্যানেল আই অনলাইনের হাতে এসেছে তার সঙ্গে শনিবার প্রকাশিত ইত্তেফাকের প্রথম পাতা মিলিয়ে দেখা যায় যে, পত্রিকার প্রথম পাতার নাম, প্রকাশকের নাম, ডিজাইনসহ যাবতীয় সবকিছু ঠিক রেখে কয়েকটি ভুয়া সংবাদ ইত্তেফাকের ফন্টের মতো করে টাইপ করে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। লাল কালি দিয়ে লেখা ‘আমি সম্পূর্ণসুস্থ’ ‘সরকারের মিথ্যাচার প্রমাণিত’ এই শিরোনামের কোন লেখা ১৪ তারিখের ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়নি।