আসাদুজ্জামান : চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক গাইনসহ নয় সদস্যের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের বিচারক রাজীব রায় রায় চৌধূরী তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জামিন বাতিলকৃতরা হলেন, চম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক গাইন, ইউপি সদস্য গোলাম কাইয়ুম, আব্দুর রশিদ গাইন, মো. আবু বক্কর গাইন, মো আব্দুস সাত্তার খান, মো. আবু বক্কর, ঠাকুর দাস সরকার, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রাধা রানী অধিকারী, রাফেজা খাতুন ও শ্যামলী রানী সরকার।
এর আগে, খাদ্যশস্য নীতিমালা অনুসরন না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হতদরিদ্র জনগনকে বাদ রেখে ৪৬ জন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করে ১০টাকা কেজি চাল বিতরনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারি পরিচালক রাজ কুমার সাহা বাদি তাদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৪ই জুন কালিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকল্পে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থার আওতায় পল্লী অঞ্চলের হত দরিদ্র জনসাধারণকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকার কর্তৃক খাদ্যশস্য বিতরণ নীতিমালা, ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়। এরই আলোকে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলাধীন তনং চম্পাফুল ইউনিয়নে হত দরিদ্রদের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১০টাকা কেজি দরে মাসিক ৩০কেজি হারে (পরিবার প্রতি) চাল বিতরন নীতিমালার আওতায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যগণ এক হাজার ২৫৩ জন হত দরিদ্রের নামের তালিকা উপজেলা পরিষদে জমা দেন। ইউপি চেয়ারম্যান, ছয়জন ইউপি সদস্য ও তিনজন সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পরস্পর যোগসাজসে নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, ধনী এমন ৪৬জন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিকে তালিকাভূক্ত করে ৪১ হাজার ৪০০ টাকা মূল্যের চার হাজার ১৪০ কেজি চাল আত্মসাৎ করেন। যা দন্ডবিধি ৪০৯/৪২০/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ নভেম্বরের মধ্যে এসব অপরাধ সংগঠিত হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
উক্ত মামলায় আসামীরা দীর্ঘ দিন উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন। এর পর তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আজ তারা সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জামিন চাইলে আদালতের বিচারক রাজীব রায় চৌধুরী তাদের জামিন বাতিল করেন। এ মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন, এড. এ.এস.এম আশরাফুল আলম। অপরদিকে, রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি ছিলেন, দুদক পিপি এড. মোস্তফা আসাদুজ্জামান দিলু।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি ও জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. ওসমান গণি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট