ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, মার্কিন সরকার যদি ওয়াশিংটনস্থ ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনায় অটল থাকে তবে আমেরিকার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন ওই মিশনের অনুমতি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ফিলিস্তিন এ হুমকি দিল।
মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সিনিয়র আলোচক সায়েব এরিকাত বলেছেন, “আমরা এই মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেব।” তিনি ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধ করে দেয়ার মার্কিন সিদ্ধান্তকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেন।
এরিকাত বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে এই হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের তৎকালীন প্রধান ইয়াসির আরাফাত ১৯৯৩ সালে আলোচনার মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংকট মিটিয়ে ফেলার মার্কিন প্রস্তাব মেনে নেন। মার্কিন মধ্যস্থতায় ওই আপোষ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরের বছর ১৯৯৪ সালে আরাফাতের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা বা পিএলও ওয়াশিংটনে একটি কূটনৈতিক মিশন খোলে। তখন থেকে মার্কিন সরকার প্রতি ছয় মাস পর এই মিশনের অনুমতি নবায়ন করে।
ওই অনুমতি নবায়নের অনেকগুলো শর্তের একটি হচ্ছে, ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যত বড় অপরাধই করুক না কেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর জন্য আন্তর্জাতিক কোনো আদালতে যাওয়া যাবে না।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষ ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করছিল বলে ওয়াশিংটন দাবি করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা ‘ফিলিস্তিনি নেতাদের সুনির্দিষ্ট কিছু বক্তব্যের’ বরাত দিয়ে দাবি করেছেন, তারা আইসিসি’তে যাওয়ার পরিকল্পনা করার কারণে পিএলও’র মিশনের অনুমতি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইসিসি’র প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণ এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালানোর দায়ে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
পিএলও ইসরাইলের সঙ্গে আপোষ প্রক্রিয়া শুরু করলেও ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে এসেছে। এসব আন্দোলন বলছে, আলোচনার মাধ্যমে নয় বরং প্রতিরোধ সংগ্রামের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায় করে ছাড়বে।