পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল নির্মাণ পর্বের কাজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নিজের হাতে প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ৩২তম দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হলো বাংলাদেশ।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কংক্রিট ঢালাইয়ের স্থান ঘুরে দেখেন। পরে সেখানে তিনি সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।
মূল নির্মাণ পর্বের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিন থেকেই ঘড়ির কাঁটা চলতে শুরু করেছে। অর্থাৎ, প্রকল্প শেষ হওয়ার ক্ষণগণনা শুরু হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ শেষ করার জন্য ঠিকাদার কোম্পানি রাশিয়ার অ্যাটমস্ট্রয়েক্সপোর্ট আজ থেকে ৬৬ মাস বা সাড়ে পাঁচ বছর সময় পাবে। সে অনুযায়ী ২০২৩ সালের মে-জুনে কেন্দ্রটির ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট এবং এর পরের বছর একই ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট চালু হওয়ার কথা।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ১৯৬১-৬২ সালে। তবে ২০১১ সালের ২ নভেম্বর রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তসরকার সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর এই প্রকল্পের কাজ গতি পায়। তারও ছয় বছর পর আজ এই প্রকল্পের মূল নির্মাণ পর্বের কাজ শুরু হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পৃথিবীর পারমাণবিক ক্লাবের ৩২তম সদস্যদেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলো। একই সঙ্গে বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে ষষ্ঠ এবং সার্কের তৃতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দেশের তালিকায় ঢুকল।
রাশিয়ার দেওয়া প্রকল্প ব্যয়ের ৯০ শতাংশ সরবরাহ ঋণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বাধুনিক (থ্রি প্লাস জেনারেশন) ‘ভিভিইআর ১২০০’ প্রযুক্তির পরমাণু চুল্লি ব্যবহার করা হবে। রাশিয়ার বাইরে এই প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুরেই প্রথম হচ্ছে।
বর্তমানে পৃথিবীর ৩১টি দেশে ৪৫০টি পারমাণবিক বিদ্যুতের ইউনিট চলমান আছে। এগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩ লাখ ৯২ হাজার মেগাওয়াট (৩৯২ গিগাওয়াট)। বাংলাদেশ ছাড়া আরও ৬০টি ইউনিট বিভিন্ন দেশে নির্মাণাধীন রয়েছে, যার মোট ক্ষমতা প্রায় ৬০ হাজার মেগাওয়াট।