কৃষ্ণ রায়, পাইকগাছা, খুলনা : দক্ষিণ খুলনার ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছা পাবলিক লাইব্রেরি ও যাদুঘরটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। জনবল, অবকাঠামো সংস্কার, আসবাবপত্র ও বই সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় পাঠক শূূূন্য হয়ে পড়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এর কোন অভিভাবক নেই।
খুলনার পাইকগাছা সদরে ১৯৮৫ সালে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স.ম. বাবর আলী পাবলিক লাইব্রেরি ও যাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন। যার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয় শহিদ এম, এ গফুর মিলনায়তনের একটি কক্ষে। ১৯৮৫ সালে ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানের নামীয় সম্পত্তিতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৮৭ সালে ডিসেম্বরে তৎকালীন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম ৭২-৩০ ফুটের ২ কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনের কাজ উদ্বোধন করেন। ১টি কক্ষ লাইব্রেরি ও আর ১টি যাদুঘর বা সংগ্রহ শালা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। লাইব্রেরিটি পরিচালনার জন্য ১৯৮৮ সালে কল্লোল কুমার মল্লিককে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৯১ সালে জাতীয় বেতন স্কেলে বেতনভাতা পান। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি পৌরসভা নিয়ন্ত্রণে নেয়। পৌরসভার বাজেটে লাইব্রেরির জন্য বাজেট ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে লাইব্রেরির অনুকুলে কোন বরাদ্দ থাকে না। অবকাঠামো সংস্কারের অভাবে লাইব্রেরি ভবনটি ধসে ধসে পড়ছে। বর্তমানে লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন বই সংযোজন করা হয় না এবং রয়েছে কয়েকটি ভাংগা চেয়ার, টেবিল ও আলমারী। ৫টি জাতীয়, ৩টি আঞ্চলিক দৈনিক, ১টি সাপ্তাহিক ও ১টি মাসিক পত্রিকা থাকলেয় বর্তমান রয়েছে মাত্র তিনটি। বইয়ের সংখ্যা ৫,৩৯১টি, থেকে বর্তমান আছে দু-তিনশ, মত। বর্র্তমান পাঠকের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কুঠায়। এক সময় প্রতিদিন পাঠকের সর্বনিম্ন আগমন ছিল ১৬০/১৮০জন। আজীবন সদস্য ১৪৬, সাধারণ সদস্য ছিল ১৫৫ জন। বর্তমান কোন সদস্য আছে কিনা তাঅনেকেই জানেনা। যাদুঘর ও সংগ্রহ শালায় রয়েছে বিশ্ববরণ্যে বিজ্ঞানী পি.সি. রায়ের তৎকালীন বৃটিশ সরকার কর্তৃৃক স্যার উপাধি পাওয়ার তরবারী, তার পড়ার টেবিল, পূজায় ব্যবহৃত ২টি খড়গ, বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা, সাহিত্যিক স্বহস্তে লেখা পত্র। রায় সাহেব ললিনী কান্ড রায় চৌধুরীর তরবারী, রায় সাহেব বিনোদবিহারী সাধুর পবিত্র গীতা, ব্যবহৃত ভৈজষপত্র। ১৫০ বছরের পুরানো তিমি মাছের কংকাল, ২০০টি দেশের মুদ্রা, মোঘল আমলের মুদ্রা, স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহৃত কামানের সেল, মংলা বন্দরে নিক্ষেপকৃত ৪০গ গ মর্টারের সেল, গুলি বাক্সসহ ইত্যাদি।