আরাফাত আলী, কালিগঞ্জ : কালিগঞ্জের কথিত গুমের শিকার যুবক মন্টুলাল কর্মকারকে (৩২) পাইকগাছা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত ৮ টার দিকে পাইকগাছা থানার সামনে থেকে পাইকগাছা থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করার পর কালিগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের লক্ষ্মীপদ কর্মকারের ছেলে মন্টুলাল কর্মকারের সাথে পাইকগাছা উপজেলার মঠবাড়িয়া গ্রামের বিষ্ণুপদ কর্মকারের মেয়ে সীমা রানী কর্মকারের ২০১৩ সালে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দেড় বছর বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। প্রায় দু’বছর যাবত শ^শুর লক্ষ্মীপদ কর্মকার ও শাশুড়ি খুকুমনি কর্মকারের সাথে পারিবারিক বিরোধের সূত্র ধরে সীমা রানী কর্মকার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে পিতার বাড়িতে অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের মধ্যস্থতায় মামলা প্রত্যাহার করে তারা। বছরখানেক আগে বিরোধ মিমাংসা হওয়ার পর সীমা রানী স্বামীর বাড়ি আসতে চাইলেও তার শ^শুরবাড়ির লোকজনের অনিচ্ছার কারণে তিনি পিতার বাড়িতে থাকতে বাধ্য হন। এক পর্যায়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারী কাউকে না জনিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় মন্টুলাল কর্মকার। এঘটনায় গত ৯ ফেব্রুয়ারী কালিগঞ্জ থানায় তার বড় ভাই রামপ্রসাদ কর্মকার একটি মিসিং জিডি করেন (জিডি নং-৩৮৩)।
এদিকে মন্টু লালের বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার ঘটনায় বড় ভাই রামপ্রসাদ কর্মকার, ভাগ্নে তাপস মজুমদারসহ আরও কয়েকজনের উপস্থিতিতে শ^শুর বিষ্ণুপদ কর্মকার ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাঁসাতে তাদের বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন পিতা লক্ষ্মীপদ কর্মকার। একদিন পর (২৫ ফেব্রুয়ারী) রাত ৮ টার দিকে পাইকগাছা থানার সামনে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশ মন্টু লালকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ওই রাতেই পাইকগাছা থানা থেকে মন্টুলালকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
কালিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন পাইকগাছা থেকে মন্টু লালকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে পিতা লক্ষ্মীপদ কর্মকার ও বড় ভাই রামপ্রসাদ কর্মকারের সাথে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। এজন্য মন্টু নিজেই বাড়ি থেকে চলে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। মোবাইল বন্ধ রাখায় তার সাথে পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল বলে মন্টু লাল পুলিশকে জানায়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার রাতে মন্টু লালকে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে তার বড় ভাই রামপ্রসাদ কর্মকারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে বলে উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট