এস,এম,আহম্মাদ উল্যাহ বাচ্ছু : সারাদেশের ন্যায় কালিগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা আগামী ২০ নভেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে উপজেলার ১২ ইউনিয়ন ১২ টি কেন্দ্রের সমাপনী পরীক্ষার গ্রহণের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা অডিটোরিয়ামে পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভার পর হঠাৎ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের একটি আবেদনকে কেন্দ্র করে আসন্ন পরীক্ষা নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশংকা দেখা দিয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে গত ১৬ অক্টোবর দুপুরে প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় জনবল নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা শেষে জেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের হল সুপার ও সহকারী হলসুপার হিসেবে এবং যোগ্য সহকারী শিক্ষকদের সহকারী হলসুপার হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারছেন না কালিগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকবৃন্দ। সহকারী শিক্ষকদের সহকারী হল সুপার হিসেবে দায়িত্ব দিলে প্রধান শিক্ষকগণ হল সুপার ও সহকারী হল সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর উক্ত দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদানের জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেয়া ওই আবেদনের অনুলিপি সদয় অবগতির জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর প্রদান করা হয়েছে। গত ১৬/১১/১৬ তারিখে দাখিলকৃত আবেদনে উপজেলার গান্ধুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৮নং মৌতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ভদ্রখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ৯৭ জন প্রধান শিক্ষক সাক্ষর করেছেন। ওই আবেদনে তারা জানান, গত ০৯/০৩/২০১৪ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদ মর্যাদা প্রদান করা হয়। সেই বিবেচনায় আসন্ন পরীক্ষায় সহকারী হল সুপার হিসেবে সহকারী শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হলে প্রটোকল অনুযায়ী সাংঘর্ষিক হবে। তাই সহকারী শিক্ষকদের পরীক্ষায় সহকারী হল সুপারের দায়িত্ব দেয়া হলে সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের অব্যহতি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে এই আবেদনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বৃহৎ ব্যবস্থাপনার এই পরীক্ষার ঠিক পূর্ব মূহুর্তে প্রধান শিক্ষকগণ এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় পরীক্ষায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা দেখা দিয়েছে। এদিকে প্রধান শিক্ষকদের দাখিলকৃত আবেদনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক এস,এম গোলাম রহমান ও সদস্যসচিব বিশ্বনাথ অধিকারী শীলন জানান, উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনেক যোগ্য সহকারী শিক্ষক সুনামের সাথে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় সহকারী শিক্ষকদের সহকারী হল সুপার হিসেবে দায়িত্ব দিলে প্রধান শিক্ষকগণ অব্যহতি নিবেন বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এটা হতাশাজনক। এর মাধ্যমে সহকারী শিক্ষকদের প্রকারান্তরে অপমান করা হয়েছে। বড় পরিসরে আয়োজিত পাবলিক পরীক্ষার পূর্বে প্রধান শিক্ষকদের এধরণের আচরণ প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে অবমূল্যায়ন ও সরকারি চাকুরি বিধি লংঘনের শামিল বলে তারা মনে করছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসান প্রধান শিক্ষকদের হল সুপার ও সহকারী হল সুপারের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেয়ার বিষয়ে কোন আবেদন পাননি জানিয়ে বলেন, সরকারি দায়িত্ব পালন না করার কোন কারণ নেই। বিষয়টি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার শেখ ফারুখ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পূর্ববর্তী পোস্ট