রাজনীতির খবর: কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী শেরপুরের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। আজ সোমবার দুপুরে শহরের চকবাজারে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ কথা জানান।
শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ থেকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীকে প্রত্যাহার এবং আরো পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ও সুপারিশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুটি অংশের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকে জেলা আওয়ামী লীগ।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পড়েন সহসভাপতি খন্দকার নজরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে খন্দকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে শেরপুর জেলা থেকে প্রত্যাহার না করলে শেরপুরের উন্নয়নের পরিবর্তে ক্ষতি হবে। মতিয়া চৌধুরী শেরপুর জেলা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। অথচ তিনি জেলা সদরে আসেন না। শেরপুরের কোনো উন্নয়ন করেন না। কিছু প্রতিষ্ঠান জেলা সদরে হওয়ার কথা থাকলেও তিনি নকলা-নালিতাবাড়ীতে (মতিয়া চৌধুরীর সংসদীয় এলাকা) ওই প্রতিষ্ঠানগুলো করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও একটি সভাতেও তিনি উপস্থিত হননি। এসব কারণেই জেলা আওয়ামী লীগ সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে মতিয়া চৌধুরীকে প্রত্যাহারের সুপারিশ জানানো হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার নজরুল আরো বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভার সিদ্ধান্ত দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের চিঠির আলোকেই নেওয়া হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ মেনে নেবে না শেরপুরবাসী।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মজদুল হক মিনু ও ফকরুল মজিদ খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম উৎপল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খোরশেদ আলম চেয়ারম্যানসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গত শনিবার শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভায় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে প্রত্যাহার ও শেরপুর ৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক চাঁনসহ আরো চার আওয়ামী লীগ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত বাকি চার নেতা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সামসুন্নাহার কামাল, নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল হক ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক এবং নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ।
এ ছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার সিদ্ধান্তও নেন শেরপুর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। পরে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়।
পরে গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের আরেকটি অংশ জেলা শহরের খরমপুরে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা কমিটির এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে আখ্যা দেয়। এই অংশটির নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুর কবির রুমান ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু।
এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হুইপ আতিউর রহমান আতিকের বিরুদ্ধে তারা ঝাড়ু মিছিল বের করেন এবং তার কুশপুত্তুলিকা পোড়ান। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগ।