দেশের খবর: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর শুক্রবারও (০৩ আগস্ট) পরিবহন মালিকরা গাড়ি না ছাড়ায় রাস্তায় বেরিয়ে বিপাকে পড়েছে রাজধানীর মানুষ। সকাল থেকে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে গণপরিবহনের এমন সংকট দেখা যায়। তবে সড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস চলাচল করতে দেখা গেছে।ছুটির দিনে সড়কে বাসের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম থাকে। কিন্তু আজ আক্ষরিক অর্থে দুই-একটি বাস ছাড়া গণপরিবহন দেখা যায়নি। এর ফলে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। শত শত মানুষকে রাস্তায় হাটতে দেখা গেছে।
মতিঝিল, পল্টন, ফার্মগেট, রোকেয়া সরণি, মিরপুর রোড, সাত মসজিদ রোড, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, প্রগতি সরণি, এলিফ্যান্ড রোড ঘুরে কোনো গণপরিবহন দেখা যায়নি।
২৯ জুলাই দুপুরে বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। ঘটনার পর নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসতে হাসতে বিষয়টিকে নিয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চার দিন ধরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে অবস্থান নেয়। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পুরো ঢাকা কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে।
এমন পরিস্থিতিতে গত বুধবার সচিবালয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পরে তিনি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। পরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় আজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল অনেক কম। গত দুই দিনের মতো শুক্রবারেও রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক ছিল গণপরিবহনশূন্য। এর ফলে অ্যাপস ভিত্তিক যানবাহন, সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশায় করে অফিস যেতে হচ্ছে। বিভিন্ন রুটে দুই-একটি বাস চলাচল করলেও সেগুলোতে ছিল যাত্রীতে ঠাসা।
মহাখালীতে যাওয়ার জন্য মতিঝিলে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন আবুল কাশেম। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর অটোরিকশা খুঁজছেন। কিন্তু অটোরিকশাতেও চাওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। শেষশেষ বিরক্তি প্রকাশ করে সিএনটি অটোরিকশায় করেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
আবুল কাশেমের মতো আরও অনেকওই এমন অবস্থা। কেউবা অটোরিকশায় করে আবার কেউবা রিকশায় করে যাচ্ছেন তাদের গন্তব্যে।
পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাদের অনেক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ কারণে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় তারা বাস বন্ধ রেখেছে।
রাস্তায় বাস নেই, ভোগান্তিতে মানুষ
পূর্ববর্তী পোস্ট