ভিন্ন স্বাদের খবর: সময়কে জয় করার কত চেষ্টাই না করেছে মানুষ। কিন্তু নিজের কাজ ঠিকই করে চলেছে সময়। সবকিছুর মতো মানুষের শরীরের উপরও দাপটের সাথে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। হলিউডের সায়েন্স ফিকশন মুভিতে দেখা যায় সময়ের অনেক পেছনে ফিরে যাবার কিংবা বর্তমানে বসে ভবিষ্যতে ঢুকে পড়ার নানা দৃশ্য। কিন্তু বাস্তবে কি এটা সম্ভব? যদি সম্ভব হতো তবে কত মজাই না হতো। একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থা উপভোগ করতে পারতো।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সময়কে থামানো বাস্তবে সম্ভব নয়। সেটার চেষ্টা করাও বোকামি। তবে আমরা নিজেদের শরীরের প্রক্রিয়াটাকে সময়ের বিপরীতে থামিয়ে দিতে পারি। তাহলেই তো সেটা সময়কে ‘থামিয়ে’ দেয়ার সামিল হবে। একই ‘স্থানে’ আমরা দাঁড়িয়ে থাকতে পারব বছরের পর বছর। আমাদের প্রকৃতিতে ব্যাঙসহ বেশ কিছু প্রাণীর ‘হাইবারনেশন’ বা শীতনিদ্রা থেকে বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টি মাথায় এনেছেন। তারা বলেছেন, তাদের গবেষণা শুরু হয়েছে মূলত দুর্গম এলাকায় যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সেনাদের চিকিত্সার স্বার্থে। হাসপাতালে নেয়ার আগ পর্যন্ত যাতে আহতকে বাঁচিয়ে রাখা যায় সেই প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে তাদের গবেষণায়। আহতকে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তার শারিরীক অবস্থার এমন পরিবর্তন করা হয় যাতে শারিরীক প্রক্রিয়াগগুলো ধীরগতিতে হয়। এতে শরীরের ক্ষতস্থানের অবনতিও হবে না। শরীরে প্রয়োগ করা ওষুধ রোগীর আহত হবার সেই মুহুর্তটিকেই ধরে রাখবে, সামনে এগোবে না। তার মানে অনেকটা সময়কে থামিয়ে দেয়ার মতোই!
বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াটিকে বলেছেন বায়োস্টাসিস। আনবিক স্তরে এটি শরীরের জৈবিক প্রক্রিয়াকে বহুগুনে কমিয়ে দিতে পারবে। এতে শরীরের বিপাক এত ধীরগতিতে হবে যে আমাদের শরীর একই অবস্থায় থাকতে পারবে বছরের পর বছর। ৩০ বছর বয়সে কারো উপর এই প্রক্রিয়ার প্রয়োগ হলে অনেক বছর ধরে তার চেহারা কিংবা শারিরীক সক্ষমতা সেই ৩০ বছর বয়সের মতোই থাকবে। তারা বলছেন, মানুষের যৌবন ধরে রাখা তাদের গবেষণার উদ্দেশ্য নয়। গুরুতর আহতকে চিকিত্সা শুরুর আগে যাতে তার মৃত্যু না হয় সেজন্য আহতাবস্থার মুহুর্তটিকে ‘পজ’ করে দেয়া বা থামিয়ে দেয়া। আর মঙ্গল গ্রহ কিংবা বহু আলোকবর্ষ দূরের অন্য কোনো গ্রহে যদি মানুষকে যেতে হয় তবে এভাবেই সময়কে থামিয়ে দিতে হবে। নইলে সেখানে পৌছানোর আগেই তার মৃত্যু হবে। যাহোক তাদের এই গবেষণা সফল হবে কি না সেটা সময়ই বলে দেবে।