অনলাইন ডেস্ক: ময়মনসিংহের একাধিক ভেজালবিরোধী অভিযানে গ্রামের আইসক্রিম কারখানাগুলোতে নানা ধরনের বিষাক্ত উপাদান পাওয়া যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গরমের সময় জেলার বিভিন্ন উপজেলা সদরসহ গ্রাম এলাকার বিভিন্ন হাটবাজারে আইসক্রিম কারখানাগুলো তাদের ব্যবসা করে। মালাই, নারিকেল, দুধ, লেমন আইসক্রিম নামে কমবেশি দামে এসব দেদার বিক্রি হয়। গরমের কারণে বিদ্যালয় অথবা এলাকার শিশুরা এসব আইসক্রিম ব্যাপকভাবে খেয়ে থাকে।
বাস্তবে এসব আইসক্রিম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে। দূষিত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হলো, এগুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে ঘন চিনি, কাপড়ের রং, চক পাউডারসহ নানা ক্ষতিকর উপাদান। সর্বশেষ নারিকেলি আইসক্রিমে পাওয়া গেছে প্লাস্টিকের গুঁড়া।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর গৌরীপুর উপজেলার গাজীপুরে জেলিট আইসক্রিম কম্পানিতে অভিযান চালায় জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সেখানে আইসক্রিমে ভয়ংকর ক্ষতিকর উপাদানের প্রমাণ মেলে। দেখা যায়, চিনির বদল ঘন চিনি ব্যবহার করা হচ্ছে। কাপড়ের সবুজ রং মেশানো হচ্ছে আইসক্রিমে। চক পাউডার দিয়ে দুধ বানানো হচ্ছে। নারিকেলের গুঁড়ার সঙ্গে মেশানো হচ্ছে প্লাস্টিকের গুঁড়া। ময়মনসিংহের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানাও করেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জনবল স্বল্পতার কারণে ভেজাল আইসক্রিম কারখানায় নিয়মিত নজরদারি করা যায় না। আর সচেতনতার অভাবে শিশুরা এসব খাবার খেতে ভালোবাসে। তাই অসৎ ব্যবসায়ীরা দেদার এসব ক্ষতিকর আইসক্রিম বিক্রি করে যাচ্ছে। গত ছয় মাসে যতগুলো আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালানো হয়েছে, এর সবগুলোতে ক্ষতিকর উপদান পাওয়া গেছে।
ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রব বলেন, ‘এসব আইসক্রিম ক্যান্সারসহ পেটের অসুখ, কিডনি ও লিভারের নানা জটিল রোগের কারণ হতে পারে। অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে।’
ময়মনসিংহের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন আইসক্রিম কম্পানিতে ভেজালবিরোধী অভিযান চালাচ্ছি। ভবিষ্যতে এটা আরো জোরদার করা হবে।’