দেশের খবর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম কখনো আমার শত্রু ছিল না। হেফাজতের কর্মীরা পড়াশোনা করে কওমি মাদ্রাসায়। আমি কওমি মাদ্রাসাকে মান দিয়ে তাদের উপকার করেছি। তারা এখন আমার জন্য দোয়া করছে। এখন তারা যদি আওয়ামী লীগে আসতে চান, আমি তাদের ধন্যবাদই জানাবো।
বুধবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরপর্বে ‘ শেখ হাসিনার প্রতি হেফাজতের আমির আল্লামা শফির সমর্থন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মুসলমানদের শিক্ষার যাত্রা শুরু হয় মাদরাসা দিয়ে আর হিন্দুদের টং থেকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কওমি মাদ্রাসাগুলোতে ১৪ থেকে ১৫ লাখ ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখছে। তাদের ভবিষ্যৎ ছিল না। তারা কি করতো কোথায় যেত কোনো ঠিকানা ছিল না। আমি তাদের জন্য ভবিষ্যৎ ঠিকানা করে দিয়েছি।
মাতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তান্ডব চালানোর ঘটনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, হেফাজত আমার শত্রু ছিল না। হেফাজতের ঘটনার রাতের আগে খালেদা জিয়া সবাইকে আহ্বান জানালেন আপনারা সবাই ঢাকা চলে আসেন। আমার মতো চেষ্টা করেছি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য। ওই রকম পরিস্থিতি যেন বাংলাদেশে না ঘটে। খালেদা জিয়া তাকে ওপেন সমর্থন দিয়েছিলেন, জামায়াত আল্লামা শফীকে সমর্থন দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ওই রাতে মতিঝিল শাপলা চত্বরসহ মানুষ যে টেনশনে ছিল তাদের তো টেনশনমুক্ত করেছি। এজন্য আমি তো ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। সে সময় অনেকে বলেছে আমি তো ধর্মই বিশ্বাস করি না। এ রকম একটা ভাবনা অনেকের মধ্যে ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদরাসা শিক্ষার ব্যাপারে বলবো যে, ওখানে লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা করে। তাদের কোনো স্বীকৃতি ছিল না। তারা নিজেরা নিজেদের মতো করে জীবন যাপন করতো।আপনারা যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, উপমহাদেশে শিক্ষার যাত্রা শুরু হয় মাদরাসা দিয়ে। হিন্দু ধর্মের জন্য টং থেকে। কাজেই এটাকে একবারে বাদ দেয়া যাবে না। কারণ ১৪ থেকে ১৫ লাখ ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া শিখছে। তাদের জন্য ভবিষ্যৎ ঠিকানা করে দিয়েছি।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ পরিষদে তার অংশগ্রহণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, এবারের সফরে তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কট, সাইবার নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা এবং বৈশ্বিক মাদকদ্রব্য সমস্যা নিয়ে কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ ছাড়া তিনি ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ ও গোলটেবিল বৈঠকেও অংশ নেন।
এছাড়া নেদারল্যান্ডসের রানী ম্যাক্সিমা, এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালজুলেইদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইও-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া সংবর্ধনা সভায়ও যোগ দেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।