অনলাইন ডেস্ক: তখন সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এসেছে। এ সময় দেবরের ছেলের ডাকে বাড়ির বাইরে পা দিতেই ৩০ বছর বয়সী এক আদিবাসী গৃহবধূর মুখ চেপে ধরল কয়েকজন। তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হল গ্রাম থেকে কিছু দূরে গিরান্ডি নদীর ধারের একটি ঝোপের ঝাড়ে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ, তাকে গণধর্ষণ করে যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দিয়েছে তারই শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ওই অবস্থাতেই তাকে রাস্তায় ফেলে চলে যায় তারা। প্রচণ্ড ব্যথা আর রক্তক্ষরণে অজ্ঞান হয়ে সারা রাত পড়েছিলেন ওই নারী।
নৃশংস এ ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির ঠাকুরপাট এলাকায়।
রবিবার (২১ অক্টোবর) সকালের দিকে এক ভ্যানচালক তাকে দেখতে পেয়ে গ্রামে খবর দেন। ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ওই গৃহবধূকে।
ধূপগুড়ির নিরঞ্জনপাটের বাসিন্দা তিন সন্তানের জননী ওই নারী জানান, তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভাসানের ঘাট থেকে দূরে নির্জন একটি এলাকার একটি ঝোপে। এরপর তাকে গণধর্ষণ করা হয়। সেদিন রাতে গ্রামের কেউইেএটি বুঝতে পারেননি। এ দিন সকালে ওই বধূকে প্রথমে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌমিতা শর্মা বলেন, ‘প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে রোগীর। একটু সুস্থ হলে অস্ত্রোপচার করা হবে। এখন রক্ত দেয়া হচ্ছে।’
অভিযুক্তদের মধ্যে দেবরের ছেলের সঙ্গে তারই দু’জন বন্ধু ছিল বলে জানায় ওই নারী।
ওই নারী পুলিশের কাছে তিন জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে দেবরের ছেলে-সহ দু’জনকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের সবারই বাড়ি ওই নারীর গ্রামেই। তাদের বয়স ২০ বছরের ঘরে।
এর আগে, ২০১৪ সালে পূজোর মুখে ধূপগুড়িতে ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রী নির্যাতনের শিকার হয়। পরের দিন রেললাইনের পাশ থেকে তার বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার হয়েছিল।
এ ঘটনায় পুলিশের এডিজি অনুজ শর্মা জানিয়েছেন, নিরঞ্জনপাটের ঘটনায় জেলা পুলিশকে তিন দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, জমির ভাগাভাগি নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিবাদ চলছিল। সেই রাগেই অত্যাচার করা হয় বলে ওই নারী ও তার স্বামী ধূপগুড়ি থানায় দাবি করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামে অভিযুক্তদের অনেক দুর্নাম আছে। ওই নারীর স্বামীর হাহাকার, ‘ওরা আমাকে অনেক দিন ধরে শাসাচ্ছিল। কিন্তু, আমার স্ত্রীকে এভাবে নির্যাতন করবে ভাবিনি!’