রাজনীতির খবর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলার তালিকা’ দিয়েছে বিএনপি। আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা চিঠিসহ তালিকাটি পৌঁছে দেন বিএনপির নেতারা।
এর আগে ১ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বিএনপি তাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এই গায়েবি মামলার অভিযোগ করলে প্রধানমন্ত্রী তাদের কাছে এই তালিকা চান।
বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘আমরা আংশিক তালিকা জমা দিয়েছি। জমা দেওয়া তালিকায় ১ হাজার ৪৬টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছে ৫ হাজার ২৭৪ জন। বিভিন্ন মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামির সংখ্যা ৯৬ হাজার ৭০০, অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার।’
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া তালিকার সঙ্গে বিএনপির চিঠিতে বলা হয়, কয়েক বছর ধরে বিএনপির জাতীয় নেতারাসহ দেশব্যাপী জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, এমনকি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধেও ধারাবাহিকভাবে হাজার হাজার মিথ্যা, উদ্ভট, গায়েবি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করা হচ্ছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপকহারে বিএনপি ও অঙ্গ–সংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে এবং রিমান্ডে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করছে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ও অমানবিক ঘটনা নিঃসন্দেহে গভীর উদ্বেগজনক। ন্যূনতম কোনো সত্যতা বা প্রমাণ না থাকলেও নেতা–কর্মীদের এ ধরনের বানোয়াট ও হাস্যকর মামলায় প্রতিদিন জড়ানো হচ্ছে। আশ্চর্য হলেও সত্য, বিএনপি ও অঙ্গ–সংগঠনের মৃত ব্যক্তি বা দেশের বাইরে অবস্থানরত ব্যক্তিদেরও মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।
চিঠিতে ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার সময় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে করা গায়েবি মামলার তালিকা পাঠাতে বলেন বিএনপিকে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মামলার আংশিক তালিকা পাঠানো হলো। মামলার তালিকা অনুসারে, গায়েবি মিথ্যা মামলায় নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ করে এসব মামলা প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো। পরবর্তীকালে এ–সংক্রান্ত আরও তালিকা পাঠানো হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, আইনজীবী জিয়াউদ্দিন জিয়া এবং শরিফুল ইসলাম আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে চিঠিটি দিয়ে আসেন।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল হামিদ চিঠিটি গ্রহণ করেন।