আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপতি শহরের ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির পরিদর্শনে যাওয়া ভক্তরা দেবতার কৃপা পেতে মাথার সব চুল কেটে ফেলেন৷ সেই চুল দিয়ে ব্যবসা করছে মন্দির৷
শতাব্দী পুরনো প্রথা
ভক্তদের বিশ্বাস, মাথার সব চুল কেটে ফেললে হয়ত দেবতা খুশি হবেন৷ ফলে তাঁরা যা চান, দেবতা তা করে দিতে পারেন৷ সেই আশায় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপতি শহরের ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির পরিদর্শনে যাওয়া ভক্তদের অনেকে ন্যাড়া হন৷
দিনে ৩৫ হাজার!
হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন৷ সংখ্যাটি ৩৫ হাজারই৷ সৌভাগ্যের আশায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ঐ সংখ্যক ভক্ত চুল কেটে ন্যাড়া হচ্ছেন৷ সব বয়সি মানুষই যোগ দেন এতে৷
উৎসবের সময়
অক্টোবর মাসে নয় দিনব্যাপী ব্রাহ্মোৎসবের সময় চুল কাটা ভক্তের সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪৫ হাজারে গিয়ে ঠেকে৷ ২০১৬ সালে ন্যাড়া হয়েছেন প্রায় ৩৪ লক্ষ ভক্ত৷ এর মধ্যে নারী ছিলেন ১৭ লাখ৷ নাপিত ছিলেন প্রায় দেড় হাজার৷ এর মধ্য নারী নাপিতের সংখ্যা ছিল ২৭৭ জন৷
সংখ্যা বাড়ছে
দেবতাকে খুশি করতে চুলত্যাগী ভক্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷ মন্দির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘২০১৬ মরসুমে এমন ভক্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ৷’’
কর্পোরেট রূপ দান
বিশ্বব্যাপী মানুষের চুলের ব্যাপক চাহিদার কথা ভেবে বছর দুয়েক আগে পুরো বিষয়টিকে ব্যবসায়িক রূপ দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়৷
বছরে আয়
পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চুল বিক্রি থেকে ২০০ কোটি রূপি আয় করে মন্দির কর্তৃপক্ষ, যা মোট আয়ের ১৫-১৮ শতাংশ৷
ভক্তদের জন্য আরামের ব্যবস্থা
চুল কাটার স্থান শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে৷ এছাড়া ভক্তিমূলক সংগীত শোনা ও টিভিতে এ ধরণের মুভি দেখানো হয়৷
চুল রপ্তানি
এই খাতে ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক৷ বছরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে দেশটি৷ মানুষের চুলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক চীন৷ তারপর আছে ব্রাজিল, হংকং, ইটালি আর যুক্তরাষ্ট্র৷
তিরুপতির চুলের চাহিদা
ভারতের ইকোনমিকস টাইমস বলছে, তিরুপতির মন্দিরে পাওয়া চুলের মান ভালো হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা রয়েছে৷ পরচুলাসহ অন্যান্য জিনিস তৈরিতে এই চুল ব্যবহার করা হয়৷