খেলার খবর: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৮ উইকেট। অন্যদিকে এই ম্যাচ জিততে হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ৩৬৭ রান করতে হবে জিম্বাবুয়েকে। ড্র করতে হলে খেলতে হবে টানা তিন সেশন। ৪৪৩ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে চতুর্থ দিন শেষে ২ উইকেটে ৭৬ রান তুলেছে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। ব্রেন্ডন টেইলর (৪) এবং শন উইলিয়ামস (২) অপরাজিত আছেন।
বাংলাদেশের দেওয়া পাহাড়সম টার্গেট মাথায় নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামে জিম্বাবুয়ে। ৯ ওভারের মধ্যেই ফিরতে পারতেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। কিন্তু ব্রায়ান চারির পর হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকেও জীবন দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অভিষিক্ত পেসার খালেদ আহমেদের বলে ক্যাচ দুটি ছেড়েছেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসেও এই পেসারের বলে দুটি ক্যাচ ছেড়েছিল বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। তার উইকেট পাওয়া হচ্ছে না সতীর্থদের জন্যই।
জীবন পেয়ে উইকেটে টিকে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যান মাসাকাদজা এবং চারি। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬৮ রান। দুই ক্যাচ মিস করা সেই মেহেদী হাসান মিরাজই এবার মাসাকাদজাকে (২৫) মুমিনুল হকের তালুবন্দি করেন। ২ রানের ব্যবধানে ৪৩ রান করা অপর ওপেনার ব্রায়ান চারিকে এলবিডাব্লিউ করেন তাইজুল ইসলাম। এরপর ব্রেন্ডন টেইলর আর শন উইলিয়ামস বাকী দিন কাটিয়ে দেন।
সোমবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে ৭ উইকেটে ৫২২ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করার পর আজ চতুর্থ দিন চা বিরতির সাথে সাথে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ২২৪ রানে জিম্বাবুয়ের সামনে জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ৪৪৩ রান। প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। ১৬১ করেছিলেন মুমিনুল হক। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১২২ বলে ৪টি চার এবং ২টি ছক্কায় অপরাজিত ১০১* রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
ঢাকা টেস্টে সুযোগ পেয়েও জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করায়নি বাংলাদেশ। ২১৮ রানের বড় লিড পেয়েও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে মাহমুদউল্লাহর দল। কিন্তু মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনের খেলা শুরুতেই উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৩ রান করে জার্ভিসের বলে মাভুতার তালুবন্দি হন ইমরুল কায়েস। অপর ওপেনার লিটন দাসও নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। জার্ভিসের বলেই বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৬ রান করে।
এই বিপদের মাঝে আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক (১) ভরসা দিতে পারেননি। ত্রিপানোর বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন উইকেটকিপার চাকাভার গ্লাভসে। আগের ইনিংষের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিমও আজ ব্যর্থ। ৭ রান করে ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ ত্রিপানোর দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হলে ২৫ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর অভিষিক্ত মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রচণ্ড চাপের মাঝে ৯১ রানে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মিঠুন। মাহমুদউল্লাহও ১০মাস এবং ১০ ইনিংস পর তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ৮৩* রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। গত ১০ ইনিংসে তার রান ছিল ২৮*, ১৭, ৬, ০, ১৫, ০, ৪, ০, ১৬, ৩৬। মিঠুন ৬৭ রান করে ত্রিপানোকে ছক্কা মারতে গিয়ে মাভুতার তালুবন্দি হলে এই দুজনের ১১৮ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙে।
৫ রান করে আরিফুল হক উইলিয়ামসকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান। আগের ইনিংসে অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরি করা মেহেদী মিরাজকে এলবিডাব্লিউ ঘোষণা করলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। এরপর তিনি দারুণ সঙ্গ দিয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে। লিড চারশ ছাড়িয়ে যায়। অপেক্ষা ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরির। দীর্ঘ ৮ বছর পর ১২২ বলে ৪টি চার এবং ২টি ছক্কায় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। ৬ উইকেটে ২২৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ১০১* এবং মেহেদী মিরাজ ২৭* রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ৩০৪ রানে অল-আউট হয় জিম্বাবুয়ে। দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকান ব্রেন্ডন টেইলর। তার ১১০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি থামিয়ে দেন মেহেদী মিরাজ। টেইলরের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়া পিটার মুর সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। তার ৮৩ রানের ইনিংসটি থামে আরিফুল হকের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে। টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেন তাইজুল ইসলাম।