খেলার খবর: ২০১৬ সালে ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অভিষেকের পর গত দুই বছর ধরে সাদা পোশাকে দলের অন্যতম সদস্য হয়ে উঠেছেন স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। অভিষেক টেস্টে ১২ উইকেট নিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়া মিরাজ যে লম্বা রেসের ঘোড়া সেটি আরও আগেই প্রমাণ দিয়েছেন। তবে সদ্য সমাপ্ত চট্টগ্রাম টেস্টে আরেক অফস্পিন অলরাউন্ডার নাঈম হাসান অভিষেকে সর্বকনিষ্ট বোলার হিসেবে ৫ উইকেট নিয়ে সবার নজর কাড়েন। নাঈমের আবির্ভাব অঘোষিতভাবেই তাকে মিরাজের প্রতিদ্বন্দ্বী করে তোলে। সেই টেস্টে মিরাজ নিয়েছিলেন তিন উইকেট।
রবিবার ঢাকা টেস্টে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানে হারানোর দিনে মিরাজের ঝুলিতে জমা পরে আবারও ১২ উইকেট। ম্যাচ শেষে সবাই যখন স্ট্যাম্প দখলে মরিয়া তখন মিরাজ চলে এলেন মাঠের বাইরে। অনুশীলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া তামিমের সঙ্গে এসে হাত মেলালেন।
কারণটা জানা গেল আরও একটু পরে। চট্টগ্রাম টেস্টে মিরাজের মুখমণ্ডলে যে হতাশার ছায়া পড়েছিল তা কাটাতেই ম্যাচ শেষে তামিম মিরাজকে ফোন দিয়েছিলেন। আর তামিমের অনুপ্রেরণাদায়ক সেই এক ফোনেই আবারও ম্যাচ সেরা হলেন মিরাজ।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলন শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে মিরাজ বলেন, ‘আমি কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবি না। ও (নাঈম) ভালো করবে, আমিও ভালো করব। চারজন তো এক সঙ্গে খেললামই। সে যদি ভালো করে আমার জন্য কাজটা সহজ হয়ে যাবে। আমার ওপর যে চাপটা থাকে, একটু হলেও কমবে। ও ভালো করলে দলের জন্যই ভালো। এখন আমি ব্যাটিংয়ে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারব। সবাই বলে, আমি শুধু বোলিং করি।’
আর যার ফোন পেয়ে ম্যাচ সেরা হলেন সেই তামিমের প্রতিও মিরাজের কণ্ঠে কৃজ্ঞতার ফুল ঝরলো।
ডানহাতি এই অফস্পিন অলরাউন্ডার বলেন, ‘চট্টগ্রাম টেস্ট শেষ হলে তামিম ভাই আমাকে ফোন করেছিলেন। সিনিয়র খেলোয়াড়েরা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেন, উৎসাহ দেন, এটা অসাধারণ ব্যাপার। বললেন, “মিরাজ তুই কী ধরনের বোলার আমরা জানি। এই টেস্টে ভালো বোলিং হয়নি, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। নাঈম ভালো করেছে, তুই খুশি থাক। কপালে থাকলে তুইও উইকেট পাবি। যদি বেশি চিন্তা করিস, নাঈম ভালো বোলিং করছে, তুই করিসনি, তাহলে কখনো ভালো করতে পারবি না, ভালো বোলার হতে পারবি না। তুই প্রমাণিত বোলার। সব জায়গায় ভালো করেছিস, তোর ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য আছে।”
মিরাজ বলেন, ‘ওই রাতে তামিম ভাই আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছেন। তার এই সমর্থন আমার কাছে বিশেষ কিছু। ম্যাচের পর দেখেছেন আমি তামিম ভাইয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসেছি।’
আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে সফরকারী উইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ। ওই সিরিজেই চোট কাটিয়ে দলে ফিরছেন তামিম। এবার তামিমকে মাঠে পেয়ে মিরাজ নিশ্চয়ই আরও অনুপ্রেরণা খুঁজে নেবেন! কেননা, রঙিন পোশাকেও যে মিরাজের কাছে অনেক প্রত্যাশা।